আগস্ট ১৪, ২০২২, ০২:৩০ এএম
সোনা চোরাচালানের কারণে প্রতি বছর প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
গতকাল শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। সারা দেশে জুয়েলারি শিল্পের বাজারে অস্থিরতা, চলমান সংকট ও সমস্যা, দেশি-বিদেশি চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, অর্থপাচার ও চোরাচালান বন্ধ এবং কাস্টমসসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জোরালো অভিযানের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন অ্যান্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল’ এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান এনামুল হক খান দোলন।
তিনি বলেন, ‘বাজুসের প্রাথমিক ধারণা, প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার করে প্রতিদিন জল, স্থল ও আকাশপথে কমপক্ষে ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলংকার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে, যা ৩৬৫ দিন বা এক বছর শেষে দাঁড়ায় প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা।
এই সোনা পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ একদিকে রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে, অপরদিকে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হচ্ছে।’ দেশের চলমান ডলার সংকটে এই ৭৩ হাজার কোটি টাকার অর্থ পাচার ও চোরাচালান বন্ধে তিনি সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান।
পাচার বন্ধে বাজুসের প্রস্তাবনা তুলে ধরে তিনি বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর অভিযানে উদ্ধার হওয়া সোনার মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশ কাস্টমস সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে দিলে প্রতিরোধ কার্যক্রম আরও জোরদার হবে। সমিতির পক্ষ থেকে অসাধু জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের প্রতিও দেয়া হয়েছে হুঁশিয়ারি বার্তা।
বাজুসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হলমার্ক ছাড়া কোনো অলংকার বিক্রি করা যাবে না। কোনো জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের হলমার্ককৃত অলংকার নিম্নমানের পাওয়া গেলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে অবহিত করা হবে।
এনামুল হক দাবি করেন, দেশে অবৈধভাবে আসা সোনার সিকিভাগও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নজরে আসছে না। ফলে নিরাপদে দেশে আসছে চোরাচালান হওয়া বিপুল পরিমাণ সোনার চালান। আবার একইভাবে পাচার হচ্ছে। বাংলাদেশ যে সোনা চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে, এটা এখন আর কথার কথা নয়। এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য।
তিনি মনে করেন, এই পরিস্থিতি উত্তরণে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিয়মিত কড়া নজরদারি জরুরি। পাশাপাশি বাজুসকে সম্পৃক্ত করে আইন প্রয়োগকারী সব দপ্তরের সমন্বয়ে সোনা চোরাচালানবিরোধী সেল গঠন এবং চোরাচালান আইন সংশোধনও সময়ের দাবি।
ব্যাগেজ রুলের সুবিধার আওতায় সোনা ও সোনার বার আনতে গিয়ে দেশের ডলারের ওপর কেমন প্রভাব পড়ছে, তার সমীক্ষা করার তাগিদ দেন তিনি। তার মতে, সমীক্ষায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় কমবে।