আগস্ট ২৭, ২০২২, ০১:৫৮ এএম
বাংলাদেশ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি সিদ্দিক আহাম্মদ বলেছেন, কারিগরি শিক্ষকদের পদোন্নতির আগ পর্যন্ত সব প্রকার নিয়োগ বন্ধ রাখতে হবে। ৪০তম বিসিএস থেকে নিয়োগের আগে ১৮ থেকে ২৩ বছরের অভিজ্ঞ কর্মরত শিক্ষকদের পদোন্নতি, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রদানের জোর দাবি জানাচ্ছি।
গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সভা করে বাংলাদেশ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ শিক্ষক সমিতি। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে কর্মরত শিক্ষকদের পদোন্নতি না দিয়ে ৩৮তম বিসিএস থেকে নন ক্যাডার পদে নিয়োগ এবং ৪০তম বিসিএস থেকে চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে এ প্রতিবাদ সভা করা হয়।
সিদ্দিক আহাম্মদ বলেন, ৬৪টি টিএসসিতে ২০০৪ সালের পর থেকে কোনো কারিগরি শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে সরকারের লক্ষ্য অর্জনের জন্য টিএসসিতে কর্মরত কারিগরি শিক্ষকরা তিন-চারগুণ বেশি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। নিয়মিত কোর্স প্রথম ও দ্বিতীয় শিফটের নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির সাথে অতিরিক্ত কোর্স হিসেবে ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিনা পারিশ্রমিকে বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা-ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স সফলতার সাথে পরিচালনা করে বর্তমানে নিয়মিত কোর্সের সাথে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম এবং বিএমটি একাদশ শ্রেণি অতিরিক্ত কোর্স হিসেবে পরিচালনা করছেন।
তিনি বলেন, কারিগরি বান্ধব সরকার ২০২১ সালে ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অনুকূলে দুই হাজার ৬৯৫টি পদ এবং ১০০টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের জন্য ছয় হাজার ৪০০টি নতুন পদ রাজস্ব খাতে সৃজন করলেও অত্যন্ত দুঃখের ১৮ বছর রাজস্ব খাতের চাকরি করে নিয়োগ বিধি ২০১০ এবং সরকারি চাকরি আইনের বিধি ও পদোন্নতির সকল পূর্ণ থাকার পরও দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই দক্ষ শিক্ষকদের পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে না।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি আরও বলেন, টিএসসিতে কর্মরত শিক্ষকরা দীর্ঘদিন (প্রকল্পের চাকরিসহ ২২-২৩ বছর) চাকরিজীবন অতিবাহিত করায় তাদের মূল বেতন পদোন্নতির পর প্রাপ্য বেতন অপেক্ষা অধিক। তাই এসব শিক্ষককে পদোন্নতি দেয়া হলে সরকারের আর্থিক ব্যয় বৃদ্ধি পাবে না।
এতে টিএসসিতে কর্মরত শিক্ষকদের পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় তাদের কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পাবে। বক্তারা বলেন, কর্মীদের কর্মস্পৃহা বাড়াতে সরকার কর্মচারীদের বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে থাকেন, যেমন— সিলেকশন ফ্রেম, টাইমস্কেল, ওভারটাইম, লভ্যাংশ, বোনাস ইত্যাদি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, টিএসসিতে কর্মরত শিক্ষকরা ১৮ বছর রাজস্ব খাতের একই পদে কর্মরত থাকার পরও কোনো সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল দেয়া হয়নি।
এতে করে দেশের কারিগরি শিক্ষা প্রদানকারী শিক্ষকরা হতাশার মধ্যে রয়েছেন এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। টিএসসিতে কর্মরত শিক্ষকদের পদোন্নতি, টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের দাবিতে বারবার কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পত্র ও দাবি জানানো সত্ত্বেও দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নিয়ে বিসিএস থেকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ এবং ৪০তম বিসিএস থেকে নিয়োগের চেষ্টা চলছে।
ঢাকা বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক মো. বোরহান উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক মো. বোরহান উদ্দিন, ঢাকা বিভাগীয় কমিটির সদস্য হাসিনা ইয়াসমিন, মানোয়ার হোসেন, জহির আলম, নুরুল মোমেন সুমন, মো. শাহ আলম, মো. শিহাব উদ্দিন, মো. বশির আল হেলাল, মো. এনামুল হাসান কাজল, মো. মোনায়েম, মো. কামাল হোসেন প্রমুখ।