আগস্ট ২৮, ২০২২, ০৪:৩১ এএম
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করেছে সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ক্লাসের রুটিনে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এরই মধ্যে ক্লাস রুটিনের রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
আজ তা প্রস্তাব আকারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) জমা দেয়া হবে। এরপর নতুন রুটিনের ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন মিললেই তা কার্যকর করা হবে।
তবে এখন পর্যন্ত প্রাথমিকের ক্লাস রুটিনে পরিবর্তনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এনসিটিবি সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান গত শুক্রবার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন হওয়ায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ক্লাস রুটিনে কিছুটা পরিবর্তন আসছে। আমরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বৈঠক করেছি। যা রোববার মাউশিতে প্রস্তাব আকারে জমা দেয়া হবে।
এরপর তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে কার্যকর করবে মাউশি।’ ক্লাস রুটিনে কী ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সাপ্তাহিক ছুটি বাড়ায় ক্লাসের সংখ্যা বাড়তে পারে, একই সঙ্গে ক্লাসের সময়ও কমবে।
প্রাথমিকের ক্লাস রুটিনে পরিবর্তনের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি বলে জানান এনসিটিবি সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকের ক্লাস রুটিনে পরিবর্তনের কোনো নির্দেশনা এখনো আমরা পাইনি। নির্দেশনা পেলে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’ ক্লাস বাড়ার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত অবশ্যই ইতিবাচক। এর ফলে শ্রেণির পাঠ্যদানের সময়কাল ঠিক রাখা সম্ভব হবে। এতে নতুন করে শিক্ষণ ঘাটতি সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ কমে যাবে।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার এনসিটিবির সম্মেলন কক্ষে মাধ্যমিকের ক্লাস রুটিন চূড়ান্ত করতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মাউশি, কারিগরি অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকার একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ উপস্থিত থাকলেও মাদ্রাসা অধিদপ্তরের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
বৈঠকে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজধানীর একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানান, মাধ্যমিক স্তরে প্রতিদিন সাতটি করে ক্লাস নেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসাগুলোতে প্রতিদিন ছয়টি করে ক্লাস নেয়া হয়। এ ছাড়া ক্লাসের সংখ্যা বাড়ায় প্রতিটি ক্লাসের সময় কমে আসবে।
ওই শিক্ষকরা বলেন, প্রতিটি শ্রেণিতে প্রথম পিরিয়ডের সময়সীমা এক ঘণ্টা। তা ১০ মিনিট কমিয়ে ৫০ মিনিট করার কথা বলা হয়েছে। আর অন্যান্য ক্লাসের সময় ৪৫ মিনিট করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
এছাড়া এক শিফটের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদানের সময়সীমা ছয় ঘণ্টা ১০ মিনিট এবং ডাবল শিফটে ৫টা ১৫ মিনিট করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য ২২ আগস্ট দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করে সরকার। ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।