Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

ঝুম বৃষ্টিতে ঢাকায় জলাবদ্ধতা

রায়হান উদ্দিন তন্ময়

সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২, ১২:৪০ এএম


ঝুম বৃষ্টিতে ঢাকায় জলাবদ্ধতা

দেড় ঘণ্টার ঝুম বৃষ্টিতে ঢাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায় দুই সিটির বহু সড়ক। ব্যাহত হয় যান চলাচল, সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ে যাত্রীসহ ঘরমুখো মানুষ। গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

নগরের বাসিন্দারা বলেন, হালকা কিংবা ভারী বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে যায়। এমনকি ফ্লাইওভারেও বৃষ্টির পানি জমে থাকে। নগরবিদরা  বলছেন, খালগুলো দখল ও বৃষ্টির পানি যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত জায়গা নেই। আবার ৪০ শতাংশ পানি ধারণ করার সক্ষমতা নেই ড্রেনগুলোর। ফলে বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। শুধু উন্নয়ন করলেই হবে না, বরং পরিবেশের সাথে ভারসাম্য রেখে উন্নয়ন করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

সরেজমিন দেখা যায়, গতকাল দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত চলে ভারী বৃষ্টি। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্তও চলছিল হালকা বৃষ্টি। এতে নয়াপল্টন, ফকিরাপুল মোড় থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় ও বিজয়নগর পানির ট্যাংকি পর্যন্ত বৃষ্টির পানি সড়কে জমে যায়। ফলে একলেনে চলাচল করে যানবাহন। গ্রিনরোডে পানি জমায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আর শান্তিনগর-মালিবাগ-মৌচাকে হাঁটু সমান পানি জমে থাকে।

এছাড়াও বংশাল, রিয়াজবাগ, তেঁজগাও, টয়েনবি সার্কুলার রোড, মহাখালীর কিছু এলাকা, নর্দ্দা কালাচাঁদপুরসহ রাজধানীর বেশ কিছু এলাকা ও সড়কে বৃষ্টির পানি জমে যায়। এমনকি অলিগলিতেও পানি জমে থাকতে দেখা যায়। সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীসহ ঘরমুখো মানুষ।

এদিকে বৃষ্টির সময় অফিস শেষে বা প্রয়োজনীয় কাজে যারা বাইরে ছিলেন তাদের অনেককেই ভিজে যেতে হয়েছে। বৃষ্টি থেকে নিজেকে বাঁচাতে অনেককেই ফ্লাইওভারে, মার্কেটের সামনে বা ভবনের নিচে আশ্রয় নিতে দেখা যায়। আবার অনেকে ভিজেই গন্তব্যে রওনা হন।

সরেজমিন আরও দেখা যায়, তেঁজগাও-মগবাজার ফ্লাইওভারে বৃষ্টির পানি জমে আছে। ফলে একলেনে যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়। ফ্লাইওভারের পানির কারণে প্রাইভেটকারের চাকা অর্ধেক ডুবে যেতে দেখা গেছে। বৃষ্টি হলেই ফ্লাইওভারে বরাবরই পানি জমে থাকে। সবসময় এমনই হয় বলে অভিযোগ করেন চালকরা। ফকিরাপুল মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষার তরিকুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির জন্য বাসে উঠতে পারিনি। বৃষ্টি একটু কমায় এখন বাস পাচ্ছি না। বাস এলেও উঠতে পারছি না। যাত্রীর চাপ বেশি থাকায় এমন হচ্ছে। এ ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নগরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা সড়কের পানি জমা ছবি পোস্ট করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

শান্তিনগর মোড়ে ভিক্টর বাসের এক চালক জানান, সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এমনিতেই তো যানজট থাকে, আবার বৃষ্টির পানির কারণে একলেনে গাড়ি চলছে। বাসে যাত্রী থাকলেও জ্যামের কারণে আগানো যাচ্ছে না।

মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষারত শামীম নামে এক যাত্রী বলেন, অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো বাস পাচ্ছি না। বৃষ্টির কারণে সিএনজি অটোরিকশাও ভাড়া চাচ্ছে বেশি।

এসময় এক সিএনজিচালক বলেন, বৃষ্টি হলে যানজট বেড়ে যায়, নির্দিষ্ট স্থানে যেতে সময় লাগছে বেশি। ভাড়া বেশি না নিলে তো আমাদের পোষাবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ট্রাফিক সদস্য প্রতিবেদককে জানান, সড়কে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় যান চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি দীর্ঘ হচ্ছে যানজট।

যানচলাচল স্বাভাবিক করতে আমরা চেষ্টা করছি। নগরপরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মোহাম্মদ খান আমার সংবাদকে বলেন, খালগুলো দখল ও বৃষ্টির পানি যাওয়ার মতো আমাদের পর্যাপ্ত জায়গা নেই। আবার ৪০ শতাংশ পানি ধারণ করার সক্ষমতা নেই ড্রেনগুলোর।

ফলে বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। শুধু উন্নয়ন করলেই হবে না, বরং পরিবেশের সাথে ভারসাম্য রেখে উন্নয়ন করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। যদি তা না করে এমন অবস্থা চলতেই থাকবে।

এ বিষয়ে জানতে দুই সিটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের একাধিকবার কল দিয়েও তাদের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।

Link copied!