সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২, ১২:২৮ এএম
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এবার ইসিতে রয়েছে বহুমুখী চাপ। দেশের অন্যতম বিরোধী রাজনৈতিক দল তিনবারের রাষ্ট্রনেতৃত্ব দেয়া বিএনপি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে তারা এবার আর জাতীয় নির্বাচনে যাবে না। আন্তর্জাতিক নির্বাচনি সংস্থা ও বাংলাদেশের ওপর চোখ রাখা গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোও আউয়াল কমিশনকে বার্তা পাঠিয়েছে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন তারা অংশগ্রহণমূলক দেখতে চায়। ইসির ইভিএম ভোটের সিদ্ধান্তকে দেশের প্রথম সারির নাগরিকরা প্রত্যাখ্যান করে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কোনোভাবেই তারা ইভিএমে জাতীয় নির্বাচনে ভোট চান না। প্রতিটি স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএমে অনাস্থার প্রমাণ এসেছে তাদের হাতে।
অন্যদিকে বিএনপিসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক রাজনৈতিক দল ইসির সংলাপ বর্জন করেছে। গত সংসদ নির্বাচনে ভারতসহ মাত্র দু-একটি দেশ পর্যবেক্ষণ পাঠিয়েছে মাত্র। এবার সেখানে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি সবার। জনগণের অংশগ্রহণে ভোটের চিত্র দেখতে আসবে অন্তত অর্ধশতাধিক দেশের পর্যবেক্ষক। এমন পরিস্থিতির মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের খড়ডা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।ইসি থেকে ইতোমধ্যে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, আগামী বছর নভেম্বরের মাঝামাঝি কিংবা শেষে তফসিল হবে। বছরের শেষ নাগাদ অথবা ২০২৪ সালের শুরুতে ভোট হবে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনের রোডম্যাপ ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চলতি মাসেই প্রকাশ হচ্ছে রোডম্যাপ। যেভাবে ইসি ছক সাজানো হয়েছে, খুব শিগগিরই তা প্রকাশ হবে। সেপ্টেম্বর থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত কোন মাসে কী কাজ করা হবে, আউয়াল কমিশনের পরিকল্পনার আলোকে তা তুলে ধরা হবে। এ নিয়ে সম্প্রতি ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেছেন, আমরা খসড়া প্রস্তুতের কাজে করে যাচ্ছি। কমিশনই চূড়ান্ত করবে, কী বিষয় রাখা হবে। এ নিয়ে ঘোষণা দেয়া হবে।
জানা গেছে, প্রধান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রথম ছয় মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ছক নিয়ে আলোচনায় বসেন। সেই আলোকে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আলোচনাসহ যাবতীয় কাজ শেষ করেন। ইসির কর্মকর্তাদের সাথে দফায় দফায় বৈঠকও করেন। আইনি কাঠামো সংস্কার, সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ বিষয়েও কাজ হচ্ছে। বিধিবিধান অনুসরণপূর্বক ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা প্রক্রিয়াগুলোও শেষ করা হয়েছে। এখন কার্যত সমাধানের ঘোষণা মাত্র।
২০২৩ সালের জুন মাসে নতুন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে ইসি। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিভিন্ন সংস্থা বা বিভাগের সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। বর্তমানে বিতর্কিত বিষয়গুলো ধাপে ধাপে সমাধান করা হবে। আগামী মাসে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে। একই মাসে নির্বাচন পরিচালনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ইসির সংলাপ হবে। নারী নেতৃত্বের সঙ্গে সংলাপ করার কথাও রয়েছে। এছাড়া নির্বাচনে প্রযুক্তির ব্যবহার, দক্ষ নির্বাচনি কর্মকর্তার প্যানেল তৈরি ও প্রশিক্ষণের দিন-তারিখ ঘোষণা, পর্যবেক্ষণ সংস্থা নিবন্ধন ও নবায়ন কার্যক্রম এবং নির্বাচনি কার্যক্রমে গণমাধ্যমকে আইনি কাঠামোর আওতায় সম্পৃক্তকরণ ইত্যাদি পদক্ষেপ শেষ করা হচ্ছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম সভা হয়েছে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি।
সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচনের পর সংসদের মেয়াদ হচ্ছে প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। অর্থাৎ বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। সংসদের সাধারণ নির্বাচন করতে হয় মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে। তাই ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির আগে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন। বিষয়টি মাথায় রেখেই সম্প্রতি তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভোটে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। এরপর শুরু হয় নানা বিতর্ক। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করতে দেশের ৩৯ বিশিষ্ট নাগরিক ইসির কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে রাজনৈতিক সংলাপে আওয়ামী লীগসহ চারটি দল ইভিএমে ভোট চেয়েছে। বিএনপিসহ ৯টি দল ইসির সংলাপ বর্জন করেছিল, তারাও ইভিএমের বিপক্ষে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নিজেও সংলাপের সময়ে বলেছিলেন, ‘অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএমে বিশ্বাস করছে না। তাই ইভিএমের ওপর অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের এ অবিশ্বাস আমাদের আগামী নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করার পথে একটি বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে আমাদের আশঙ্কা।’ তবে শেষ পর্যন্ত আউয়াল কমিশন তার বক্তব্যের মধ্যে থাকেনি। বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান রাজনৈতিক সংলাপে গিয়ে ১৫০ আসনে ইভিএমে চান। যে দলটি ইসির নাম প্রস্তাব করেছিল, মুহূর্তেই সব দৃশ্যপট বদলে যায়।
তবে সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তিগতভাবে ইভিএম একটি দুর্বল যন্ত্র। এতে ‘ভোটার ভেরিফাইড পেপার অডিট ট্রেইল’ (ভিভিপিএটি) নেই, যার ফলে কমিশন ভোটের যে ফলাফল ঘোষণা করবে, তা-ই চূড়ান্ত হিসেবে গ্রহণ করতে হবে এবং এটি পুনর্গণনা বা নিরীক্ষা করার সুযোগ থাকবে না। এ কারণেই কমিশন কর্তৃক গঠিত কারিগরি উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান প্রয়াত জামিলুর রেজা চৌধুরী ২০১৮ সালে ইভিএম কেনার সুপারিশে স্বাক্ষর করেননি। ইভিএম ব্যবহার করে ডিজিটাল জালিয়াতিও করা যায় বলে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
বায়োমেট্রিক্স-ভিত্তিক ইভিএম অনেক ভোটারকেই শনাক্ত করতে পারে না, ফলে কমিশন প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের তাদের আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে যন্ত্রটি খুলে দেয়ার তথা ইভিএমকে ওভাররাইড করার ক্ষমতা দিয়ে থাকে। যে কোনো ইলেকট্রনিক যন্ত্রের মতো প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে ইভিএমের ফলাফল নিয়েও কারসাজি করা যায়।
এদিকে ভোট যতই এগিয়ে আসছে, আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি ততই বাড়ছে। নির্বাচন কমিশনকে সবাই সুষ্ঠু ভোটের তাগিদ দিচ্ছেন। অংশগ্রহণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য চাপও প্রয়োগ করা হচ্ছে। অতীতের নির্বাচনের দৃশ্যপট অনেকেই আর দেখতে চাচ্ছেন না।
সম্প্রতি এ নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার চ্যাটারটন ডিকসন বলেছেন, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে বলে আমি আশা করছি। যুক্তরাজ্য সামনে হতে যাওয়া বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক দেখতে চায়। এর জন্য প্রয়োজনে দুটি মূল দলসহ অন্যান্য দলের সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করা যেতে পারে। ভোট আয়োজন, গণনা ও ফলাফল প্রকাশে স্বচ্ছতা থাকা উচিত। উন্নয়নের ধারাবাহিকতার জন্য ভালো নির্বাচন দরকার। নির্বাচিত কারা হবেন, অবশ্যই তা দেশের জনগণ ঠিক করবে। উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পর্যবেক্ষক বা অন্যান্য বিষয়ে যুক্তরাজ্য কেবল সহায়তা করতে পারে। নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি।
ইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ইতো নাওকি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি কেমন— তা জানার জন্য। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তারা কী প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাও আলোচনা করেছি। বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে আশা প্রকাশ করে নাওকি বলেন, ‘নির্বাচনের এখনো এক বছর বাকি আছে। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি প্রত্যাশা থাকবে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অধিক অংশগ্রহণমূলক করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন তারা। আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচন একটি ভালো নির্বাচন হবে— এটাই আমার আশা ও প্রত্যাশা।
এছাড়া বাংলাদেশের আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে নেপালের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। আমন্ত্রণ পেলে নেপালের নির্বাচন কমিশন ও নেপালের অন্যান্য সংস্থাগুলো সর্বাধিক পর্যবেক্ষক প্রেরণ করবে বলে জানিয়েছেন নেপালের প্রধান নির্বাচন কমিশনার দীনেশ কুমার থাপালিয়া। রাজনৈতিক দলগুলো ও সাধারণ জনগণের সহযোগিতা না থাকলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশন সক্ষম হবে না। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় গণতন্ত্র ও সুশাসন নিশ্চিত করতে যৌথ সহযোগিতামূলক কার্যক্রমের বিকল্প নেই। রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে এখন ভোটের আগেই উত্তাপ ছড়াচ্ছে।
আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক, আওয়ামী লীগ খালি মাঠে গোল দিতে চায় না। শেখ হাসিনা সরকার ভালো একটি নির্বাচন বাংলাদেশে চায়।
তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি, বারবার বলেছি, আমরা এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না।
অন্যান্য বিরোধী দলগুলোরও একই কথা। রাজনৈতিক এমন উত্তাপের মধ্যেই কথা বলেছেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সক্রিয় অংশগ্রহণমূলক ভোট চায়। তবে কাউকে ধরে-বেঁধে নির্বাচনে আনা হবে না। ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন হবে না বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি। ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে তিনি এও বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট আগামী বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আলমগীর সম্প্রতি এ নিয়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখী হয়েছেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের পরিকল্পনায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েন থাকবে। ২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারি সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। সে হিসেবে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। যদি ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচন হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই নভেম্বরের ১৫ তারিখের মধ্যে শিডিউল দিতে হবে।
আর যদি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হয়, তাহলে নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে ঘোষণা হবে। নির্বাচনের মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করতে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী। গুরুত্বানুসারে তারা ঠিক করে নেবে কোথায় কোথায় থাকবে তারা। কমিশন চায় নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল ভোটে অংশগ্রহণ করুক। তবে আসা-না আসার সিদ্ধান্ত নেয়াও প্রতিটি দলের গণতান্ত্রিক অধিকার ।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আমার সংবাদকে বলেন, আগে রাজনৈতিক সমঝোতা-সমাধান প্রয়োজন। রাজনৈতিক বিষয়গুলোয় ইসির দায়িত্ব নেয়া ঠিক হবে না। দেশের প্রথম সারির নাগরিক, রাজনৈতিক দলের সবাই চাচ্ছে ইভিএমে যাতে ভোট না হয়। এটি সমাধান হওয়া ব্যতীত ইসির বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। ভোটের প্রস্তুতি অবশ্যই ইসি রাখবে, এটি তার দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, একাদশ নির্বাচনের আগে ইভিএম কিনতে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার (৪৫০ মিলিয়ন ডলার) মতো ব্যয় হয়েছে। ১৫০টি ইভিএমে নির্বাচন করতে হলে নতুন মেশিন কেনায় অন্তত অর্ধবিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে এ ধরনের বিপুল ব্যয় কতটুকু যৌক্তিক, তা ভেবে দেখতে হবে ইসিকে। অহেতুক বিতর্ক রাখা ঠিক হবে না।
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার আমার সংবাদকে বলেন, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য আবশ্যক। আমরা সেটি এখনো দেখতে পাচ্ছি না। যেমন, যদি বলি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ভোটগ্রহণে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেখানে ৯টি রাজনৈতিক দল, দেশের সুশীল ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা কেউ ইভিএমে ভোট চান না। আমরা মনে করি, কমিশনের এ সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। এটি রাজনৈতিক বিতর্ককে আরও উসকে দেবে এবং কমিশনের বর্তমান আস্থার সংকটকে আরও প্রকট করে তুলবে। আমরা আবারও একটি ব্যর্থ নির্বাচনের কবলে পড়ব, যা জাতি হিসেবে আমাদের চরম সংকটের দিকে ধাবিত করবে।