সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২, ০৩:১১ এএম
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ আজ বুধবার ঘোষণা করা হবে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বেলা ১১টায় নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে এ রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে। ইসির যুগ্মসচিব আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল আজ রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন। এ সময় অন্যান্য কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের ভাষ্য, গত সংসদ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। এবার ২০২৩ সালের ডিসেম্বর কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন। দায়িত্ব গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কয়েক দফা সংলাপ করেছে বর্তমান কমিশন। করা হয় রাজনৈতিক সংলাপও। আওয়ামী লীগসহ রাজনৈতিক দলের বড় অংশ ইসির ডাকে সাড়া দিলেও বিএনপিসহ ৯টি দল ইসির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ১৫০ আসনে ইভিএমে নির্বাচনের ইসির সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। যদিও ইভিএমের বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
গতকাল ইসি সচিব জানিয়েছেন চলতি মাসের ১৯ তারিখে ইভিএম বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ক্ষোভ ও অসন্তোষের মধ্যে এবার নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করে ছক তৈরি করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। রোডম্যাপ অনুযায়ী চলতি মাস থেকে নির্বাচন পর্যন্ত কী কী কার্যক্রম চলবে তা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন মাত্র ঘোষণার বাকি। নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা, বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা ও সংস্কার, সংসদীয় এলাকার সীমানা র্নিধারণ, নির্বাচন প্রক্রিয়া সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ নেয়া, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ অনেক কিছু থাকছে। বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে ভোটার সংখ্যা, জনশুমারি ও ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে জিআইএস পদ্ধতিতে নির্বাচনি এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত ডাটাবেজ ও অ্যাপ্লিকেশন প্রণয়ন।
আউয়াল কমিশনে যুক্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কর্মপরিকল্পনায় থাকছে আইনি কাঠামো পর্যালোচনা ও সংস্কার। নির্বাচন প্রক্রিয়া সময়োপযোগীকরণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ। সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ। নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ। বিধিবিধান অনুসরণপূর্বক ভোটকেন্দ্র স্থাপন। নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ। নির্বাচনে অধিকতর প্রযুক্তির ব্যবহার। দক্ষ নির্বাচনি কর্মকর্তার প্যানেল তৈরি ও প্রশিক্ষণ। ভোটার সচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রম। পর্যবেক্ষণ সংস্থার নিবন্ধন ও নবায়ন কার্যক্রম। নির্বাচনি কার্যক্রমে গণমাধ্যমকে আইনি কাঠামোর আওতায় সম্পৃক্তকরণ।
ইসি কর্মকর্তারা আরও জানান, নির্বাচনে অধিকতর প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে জিআইএস (ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা) পদ্ধতিতে ভোটকেন্দ্রের তথ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ডাটাবেজ ও অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার প্রণয়ন। নির্বাচনি ক্যালেন্ডার, অনলাইনে মনোনয়ন দাখিল ও গ্রহণ, প্রার্থীর তথ্য ব্যবস্থাপনা, পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম, ভোট গ্রহণ ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ডাটাবেজ তৈরি, কেন্দ্রের তথ্য ব্যবস্থাপনা এবং কেন্দ্র থেকে নিরাপদ ও দ্রুত সময়ে নির্বাচনি ফল প্রেরণ সংক্রান্ত সিস্টেমের অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার প্রণয়ন। নির্বাচন তথ্য-সংক্রান্ত অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার প্রণয়ন। সফটওয়্যারের মাধ্যমে অডিট ও বিভিন্ন রিপোর্ট প্রস্তুতের ব্যবস্থা আধুনিকায়ন, কমপ্লেইন্ট ও কমপ্লায়েন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার প্রণয়ন। প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার প্রণয়ন।
কর্মকর্তারা আরও জানান, কর্মপরিকল্পনার মধ্যে আরও আছে আগামী মাসে (অক্টোবর) নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সংলাপ। একই মাসে নির্বাচন পরিচালনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সংলাপ। আগামী নভেম্বর মাসে নারী-নেতৃত্বের সঙ্গে সংলাপ। একই মাসে সুপারিশমালার খসড়া চূড়ান্ত করা এবং ডিসেম্বরে সুপারিশমালা চূড়ান্ত করা।