নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ৯, ২০২২, ০১:৩৭ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ৯, ২০২২, ০১:৩৭ এএম
হাতছাড়া হচ্ছে জাপানের শ্রমবাজার। জাপানের সাথে জনশক্তি রপ্তানি সংক্রান্ত সম্পাদিত চুক্তির দীর্ঘদিন পরও বাংলাদেশ থেকে কর্মী প্রেরণে আশানুরূপ সাড়া মিলছে না। আইএম জাপানের প্রতিনিধি দলের সাথে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পরও দেশটিতে কর্মী নিয়োগের কোনো গতি বাড়েনি। অথচ ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, চীন, নেপাল থেকে প্রচুর সংখ্যায় অভিবাসী কর্মী জাপানে কর্মসংস্থান লাভ করছে।
আর বাংলাদেশ থেকে চলতি বছরের ৯ মাসে মাত্র ৩০০ শিক্ষানবিশ কর্মী জাপানে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কূটনৈতিক তৎপরতার অভাবেই ওই দেশটিতে শিক্ষানবিশ কর্মী নিয়োগে গতি বাড়েনি। যদিও প্রবাসী মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত ৬৮টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে জাপানে কর্মী প্রেরণের অনুমতি দিয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশ থেকে প্রচুর সংখ্যক কর্মী নেয়ার আগ্রহ থাকলেও নিয়োগকর্তারা এন-৪, এন-৫ গ্রেডের জাপানি ভাষা শিক্ষার শর্ত থাকায় কর্মী নেয়ার চাহিদাপত্র ইস্যু করতে পারছে না। সরকারের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং যথাযথ সহায়তার অভাবে সম্ভাবনাময় জাপানের শ্রমবাজার ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের দখলে চলে যাচ্ছে। অথচ জাপানের বিভিন্ন খাতে উচ্চ বেতনে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা রয়েছে। এমন অবস্থায় জাপানে শ্রমবাজার পুনরুদ্ধারে সম্পাদিত চুক্তি জরুরিভিত্তিতে সংশোধন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তা না হলে দেশটির শ্রমবাজার পুরোপুরি অন্যান্য দেশের দখলে চলে যাবে। তাতে কোটি কোটি টাকার রেমিট্যান্সের সুফল থেকে দেশ বঞ্চিত হবে।
সূত্র জানায়, বিএমইটির তথ্যানুযায়ী ১৯৭৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজে গেছে মোট এক কোটি ৩০ লাখ বাংলাদেশি। সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার জাপান, বাহরাইন, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া, লেবানন, জর্ডান ও লিবিয়ায় যথাযথ প্রক্রিয়ায় কর্মী প্রেরণের সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে জনশক্তি রপ্তানিতে আরও সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হবে। অথচ জাপানে কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র এলে প্রবাসী মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগানুমতি এবং বহির্গমন ছাড়পত্র পেতে ছয় থেকে সাত মাস সময় লেগে যায়। তাতে জাপানি নিয়োগকর্তারা কর্মী প্রেরণে অহেতুক বিলম্বের দরুণ বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে অনীহা প্রকাশ করছে। জাপানের শ্রমবাজারের স্বার্থে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিয়োগানুমতি প্রদান এবং যথযথা অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ জরুরি।
এদিকে এ প্রসঙ্গে টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার উইংয়ের প্রথম সচিব জয়নাল আবেদীন গণমাধ্যমকে জানান, জাপানে প্রচুর বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা রয়েছে। গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত জাপানে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা ছিল ১৮ হাজার ৫৫ জন। আর গত ৯ মাসে দেশটিতে আরও ৩০০ কর্মী এসেছে। জাপানের শ্রমবাজারের গতি বাড়াতে প্রবাসী মন্ত্রণালয় ও টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।