ডিসেম্বর ১৪, ২০২২, ১২:৫৩ এএম
- ১৬ বছর পর বিএনপি কার্যালয়ে এসে অলি আহমদ বললেন কঠিন কর্মসূচি দিন
- ১০ দফা দাবির আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে জামায়াতের আমির গ্রেপ্তার বলে দাবি
- বিএনপির দাবি যুক্ত করে ১০ দফা ঘোষণা জেএসডির
- ক্ষতিগ্রস্ত বিএনপি কার্যালয় দেখে ২০ দলের বিস্ময় প্রকাশ
ডিসেম্বরের শেষবেলা টার্গেট নিয়ে বিএনপি মাঠে। সঙ্গে রেখেছে সরকারবিরোধী দলগুলোকে। তারাও বিএনপির তরীতে উঠে চাঙা। দলটির শীর্ষ নেতাদের আটকের পর এবার আর পেছনে তাকাচ্ছে না তারা। দলটি তাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, রুহুল কবির রিজভীসহ শীর্ষ নেতাদের আটকের পর ঢাকার সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করে চাঙা হয়ে উঠেছে। দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে এসেছে সরকারবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে।
সোমবার গণতন্ত্র মঞ্চের মাহমুদুর রহমান মান্না, জোনায়েদ সাকি, নুরুল হক নুরসহ সবাই বিএনপি কার্যালয় পরিদর্শন করে বিএনপিকে সমর্থন দিয়ে যান পাশে থাকার এবং বিএনপির দাবির সাথে একমত পোষণ করে আগামী ২৪ তারিখ যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার দীর্ঘ ১৬ বছর পর মান-অভিমান ভুলে বিএনপি কার্যালয়ের দৃশ্য পরিদর্শন করে ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বিএনপিকে বড় কর্মসূচির সাহস দিয়ে যান। এছাড়া স্বচক্ষে বিএনপি কার্যালয় দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছে ২০ দল। সরকারকে সরাতে এক সাথে মাঠে থাকবেন বলেও ঘোষণা দিয়ে যান তারা।
এদিকে বিএনপির আন্দোলনকে সমর্থন করার পর জামায়াতের আমিরকে গ্রেপ্তারের পর দলটি অতীতের ন্যায় আবারও রাস্তায় নেমে পড়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে নতুন ভারপ্রাপ্ত আমির নিযুক্ত করে যুগপৎ আন্দোলনে ১০ দফা বাস্তবায়নে ঘোষণা দেয়া হয়। ঢাকাসহ সারা দেশে করা হয় বিক্ষোভ।
আলোচনায় ২৪ ডিসেম্বর; যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির গণমিছিল, একই দিন আওয়ামী লীগের সম্মেলন : ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের উত্তাপ এখনো কাটেনি। এরমধ্যেই ২৪ ডিসেম্বর ঘিরে নতুন করে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। এটির সঙ্গে মিল রেখে জামায়াতসহ সরকারবিরোধী দলগুলো একই দিন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। একই দিন বিএনপির গণমিছিল ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল। দিনটি সামনে রেখে গোয়েন্দা সংস্থার নানা হিসাব-নিকাশে এখন থেকে গরম হাওয়া শুরু হয়েছে। জামায়াতের আমিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেয়া হয়েছে সাত দিনের রিমান্ড। প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দলটি। কর্মসূচি চাঙা রাখতে দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। যুগপৎ কর্মসূচিতে দলটি কোমর বেঁধে মাঠে নামবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। আগামী ২৪ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন। প্রায় দেড় মাস আগেই এ সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করে দলটি। কিন্তু গত শনিবার বিএনপির ঢাকার গণসমাবেশ থেকে ২৪ ডিসেম্বর ১০ দফা দাবি আদায়ে রাজধানীতে গণমিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এখন সবার দৃষ্টি ২৪ তারিখের দিকে।
১৬ বছর পর বিএনপি কার্যালয়ে অলি আহমদ : প্রায় ১৬ বছর পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয় পরিদর্শন করে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, বীর বিক্রম বলেছেন, যেসব রাজনৈতিক দলের জনবল রয়েছে, তাদের নিয়ে শক্তিশালী কর্মসূচি দিন। যে দলে শুধু স্বামী-স্ত্রী জনশক্তি, তাদের গুরুত্ব দেয়ার দরকার নেই। যাদের মাঠ ভালো, শক্তি আছে, তাদের গুরুত্ব দিন। রাস্তায় নামুন। বিশ্বের কাছে এ সরকারের মুখোশ উন্মোচন হয়ে গেছে। দলীয় কার্যালয়ে হামলা, লুটপাটের দৃশ্য সবাই প্রত্যক্ষ করেছে। বিএনপিকে আরও শক্তিশালী হয়ে কর্মসূচি দিতে হবে। এ সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র। সরকারের সেফ এক্সিটের সময় শেষ। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ১০ দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
বিএনপি কার্যালয় দেখে বিস্ময় প্রকাশ ২০ দলীয় নেতাদের : গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন শেষে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, এই সরকার দেশে যে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে, বিএনপি অফিসের তাণ্ডব তারই নমুনা। গতকাল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা। তাদের স্বাগত জানান বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় পার্টি (জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, এনপিপির ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের অধ্যাপক আবদুল করিম, বাংলাদেশ ন্যাপের শাওন সাদেকী, ন্যাপ ভাসানীর অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, পিপলস লীগের মাহবুব হোসেন, ডেমোক্র্যাটিক লীগের সাইফুদ্দিন মনি, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মো. আবুল কাশেম, এনডিপির কারি আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের গোলাম মুহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ইসলামী ঐক্যজোটের শওকত আমিন, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নূরুল ইসলাম প্রমুখ।মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘ক্ষমতাসীনদের আক্রমণ থেমে নেই। তাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে মোকাবিলা করতে হবে। ইতোমধ্যে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা এসেছে। এ কর্মসূচি শুধু বিএনপির নয়, এটা জনগণের কর্মসূচি। আসুন, সবাই শরিক হয়ে এ আন্দোলন সফল করি। বিএনপি কার্যালয়ে যে তাণ্ডবের চিত্র দেখলাম, তা সরকারের ফ্যাসিবাদের নমুনা। তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’ তিনি অবিলম্বে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং যাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানান।সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, পুলিশ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যা করেছে, তা অকল্পনীয়। অতীতেও এমনটি ঘটেছিল। আমি এ ঘটনার নিন্দা জানাই। এ সময় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, লেবার পার্টির লায়ন ফারুক রহমান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের রফিকুল ইসলাম, কল্যাণ পার্টির নূরুল কবির পিন্টু, এুনডিপির আব্দুল্লাহ হারুন সোহেল ও বিএলডিপির এমএ বাশার প্রমুখ।
১০ দফার আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতেই জামায়াতের আমির গ্রেপ্তার বলে দাবি : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে দলটি। গতকাল কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজধানীর মৌচাক মার্কেটের সামনে থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মালিবাগ রেলগেটে প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, মু. দেলওয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইনসহ শীর্ষ নেতারা।বিক্ষোভ মিছিল-পরবর্তী সমাবেশে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বাংলাদেশের গণমানুষের মুক্তির জন্য ১০ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করার পরপরই এ সরকার অত্যন্ত ন্যক্কারজনকভাবে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা এই গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তার মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করছি, সরকারের এই গ্রেপ্তার, হামলা-মামলা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে দেশের মানুষের মুক্তির চলমান আন্দোলনকে বন্ধ করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, আজকের বাংলাদেশে শুধু ডা. শফিকুর রহমানই বন্দি নন বরং দেশের ২০ কোটি মানুষই যেন কারাগারে বন্দি। ডা. শফিকুর রহমানকে মুক্তির মাধ্যমে আমরা সারা দেশের মানুষকে মুক্ত করব ইনশাল্লাহ। ১০ দফা দাবি আদায়ে আগামী দিনে আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার ডা. শফিকুর রহমানকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. আবুল বাশার। অন্যদিকে, আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাকসহ কয়েকজন আইনজীবী তার রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিএনপির দাবির সঙ্গে যুক্ত করে জেএসডির ১০ দফা ঘোষণা : বিএনপির দাবির সঙ্গে মিল রেখে ১০ দফা রাজনৈতিক প্রস্তাবনা পেশ করেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিদ্যমান গণবিরোধী শাসনব্যবস্থাকে বিলুপ্ত করে প্রজাতন্ত্রের জন্য ‘গণশাসন’ প্রবর্তন করার ঐতিহাসিক প্রয়োজনীয়তার নিরিখে এ ১০ দফা দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ১০ দফার ঘোষণা দেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব। তিনি বলেন, প্রচলিত দলকেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা, ক্ষমতাকেন্দ্রিক বৈরিতা এবং সংঘাতমুখী প্রবণতায় রাষ্ট্র এখন উচ্চমাত্রার ঝুঁকিতে রয়েছে। জনগণের সম্মতি ও সমর্থন ছাড়া ক্ষমতা ধরে রাখতে সরকার রাষ্ট্রকে দলীয় ও ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করে প্রজাতন্ত্রকে শেষ পর্যন্ত কানাগলিতে ফেলে দিয়েছে। ফলে অন্যায়, অবিচার ও দুঃশাসনে সমাজ বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। রক্তপাত ও সংঘাত আজ মীমাংসার অযোগ্য হয়ে উঠেছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।
ড. মোশাররফ বললেন সরকারের বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে : ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ ঠেকাতে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সরকার পুলিশি অভিযান চালিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, তবে এত কিছু করেও তারা আমাদের সমাবেশ পণ্ড করতে পারেনি। বরং জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গতকাল বিকালে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। এতে যোগ দেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। ফকিরেরপুল থেকে নাইটিঙ্গেল সড়ক পর্যন্ত এক পাশ ঘণ্টা দুয়েকের মতো বন্ধ ছিল। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে নয়াপল্টন। সভায় শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবিতে আওয়াজ তোলা হয়। খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘৭ ডিসেম্বর আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তছনছ করে বর্বরতা চালানো হয়েছে। সেখান থেকে সিনিয়র নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কম্পিউটার ভেঙে ফেলছে। এসবের লক্ষ্য ছিল ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগের গণসমাবেশ পণ্ড করা। একইভাবে তারা বিভিন্ন বিভাগের গণসমাবেশ পণ্ড করতে পরিবহন ধর্মঘট ও হামলা চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছিল। তবুও ঢাকায় আমাদের গণসমাবেশ ঠেকাতে পারেনি। বরং তা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল।’ তিনি বলেন, ‘সরকার ভেবেছিল আমাদের মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তার করে সমাবেশ পণ্ড করবে। কিন্তু তারা সেটা করতে পারেনি। সরকার ব্যর্থ হয়েছে।’ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘সরকারের বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে। তারা চলে যাবে; কিন্তু আপানারা থাকবেন। সুতরাং আপনারা জনগণের পাশে থাকুন।’ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও ঢাকা উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক এবং দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু সমাবেশ পরিচালনা করেন। অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা।