জানুয়ারি ২, ২০২৩, ১২:৪৬ পিএম
- এবারও আতশবাজি ফানুস, অগ্নিকাণ্ড ভয়ভীতি ছিল
- ৯৯৯-এ ৩৬৫টি ফোন, চার স্থানে অগ্নিকাণ্ড
- ভীতসন্ত্রস্ত শিশু ছিল বয়োবৃদ্ধ ও রোগীরা
সব নিষেধাজ্ঞা ভেঙে বরাবরের মতো এবারও নববর্ষ উদযাপন করেছেন রাজধানীবাসী। ইংরেজি নববর্ষের প্রথম প্রহরে আতশবাজি ও ফানুস উড়িয়ে ২০২৩ সালকে স্বাগত জানায় তারা। তবে মানেনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপির) কোনো নির্দেশনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশনা উপেক্ষা করেই আতশবাজির ঝলকে রঙিন হয়ে উঠেছিল ঢাকার আকাশ, সেই সঙ্গে ছিল পটকার ভারী শব্দ। পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চলে রাতভর উচ্চশব্দে ডিজেপার্টি।
এতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠেছিল শিশু, বয়োবৃদ্ধ ও হাসপাতালে থাকা অসুস্থ রোগীরও। অবস্থা এমন হয়েছিল যে, সারা দেশ থেকে শব্দদূষণ সংক্রান্ত ৩৬৫টি ফোন পায় জরুরি সেবা-৯৯৯। এর মধ্যে অধিকাংশ অভিযোগই ছিল আতশবাজি ও বোমাবাজি নিয়ে। পাশাপাশি বিভিন্ন ইলেকট্রিক তার ও বাড়িতে ফানুস পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে এ যাত্রায় রেহাই মিললেও পাওয়া গেছে অগ্নিকাণ্ডের খবর।
ফানুসের কারণে রাজধানীতে চারটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। এমনকি মেট্রোরেলের বৈদ্যুতিক লাইনেও আটকে যায় ফানুস, এতে সাময়িক বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচল। গতকাল সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
গত শনিবার থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে বিধিনিষেধ সংক্রান্তে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ডিএমপি। ওই সম্মেলনে ডিএমপি জানায়, নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকায় উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান, সমাবেশ, কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিংবা ডিজে পার্টির আয়োজন করা যাবে না।
নিষিদ্ধ করা হয় ফানুস-পটকা, ঢাকার বার বন্ধ রাখার কথাও বলা হয়। আর ঘরোয়াভাবে নববর্ষ উদযাপন করতে অনুরোধ জানায় র্যাব। কিন্তু বরাবরের মতো এসব বিধি-নিষেধ অমান্যে ব্যবস্থার কথা বলার পরও বন্ধ হয়নি আতশবাজি ও ফানুস, সব নিষেধাজ্ঞা ভেঙেই অতীতের মতো এবারও নববর্ষ উদযাপনের সময় আঁতকে ওঠে ঢাকা।
জানা যায়, পুলিশের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ফানুস পড়ে মোহাম্মদপুর ছাড়াও ঢাকার আরও তিনটি স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একটি পুরান ঢাকার লালবাগে, অপরটি সদরঘাট এবং মিরপুরে। এমনকি মেট্রোরেলের তারেও ফানুস পড়ায় মেট্রোরেল চলাচলে বাধার সৃষ্টি হয়।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানায়, ফানুসের আগুনে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলেও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে এ চারটি আগুনের মধ্যে শুধু এক জায়গায়ই ফায়ার সার্ভিসকে কাজ করতে হয়েছে। বাকি তিন জায়গায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যাওয়ার আগেই আগুন নিভে যায়।
জরুরি সেবা-৯৯৯ এর পরিদর্শক (মিডিয়া) আনোয়ার সাত্তার জানান, ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২টার পর সারা দেশ থেকে শব্দদূষণ সংক্রান্ত ৩৬৫টি ফোন আসে। এর মধ্যে শুধু ঢাকা মেট্রো এলাকা থেকে ১৬০টি কলের বিপরীতে সেবা দিতে হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার বলেন, গত শনিবার রাত ১২টার পর আমরা রাজধানীর চার জায়গায় ফানুসের কারণে আগুন লাগার খবর পাই।
এর মধ্যে মানিকদি বাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের দুটি ইউনিটকে ১০-১৫ মিনিট কাজ করতে হয়েছিল। বাকি তিন জায়গায় আমাদের গাড়ি পৌঁছানোর আগেই আগুন নিভে যায়। এই চার জায়গায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটলেও তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে আগুনের কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষণিকের জন্য আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।