Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪,

সিএমএসডিতে কেনাকাটা হয় নিয়ম মেনে

মাহমুদুল হাসান

ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩, ১২:৩৪ পিএম


সিএমএসডিতে কেনাকাটা হয় নিয়ম মেনে

কেন্দ্রীয় ঔষধাগার বা মেডিকেল স্টোরস ডিপোর (সিএমএসডি) মূলত সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয়, মজুত, সরবরাহ ও স্থাপন করে থাকে। একই সাথে যেকোনো জরুরি অবস্থা এবং দুর্যোগকালীন মুহূর্তে চিকিৎসা উপকরণ পৌঁছে দেয়। কোভিড মহামারির শুরুতে সিএমএসডির কেনাকাটা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হলেও এখন শতভাগ অনুসরণ করা হয় সরকারি ক্রয়নীতি। উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে হচ্ছে কেনাকাটা। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার যাচাই করে কেনা হয় পণ্য। টেকনিক্যাল কমিটির পর্যালোচনার মাধ্যমে কেনাকাটা ও পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ভিজিটর কার্ডপ্রথা চালু করে অবাঞ্ছিত অসাধু লোকদের অবাধে গমনাগমনের পথ রুদ্ধ করা হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে চাহিদা মোতাবেক প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরতদের প্রশাসন পরিচালনা, অফিস ব্যবস্থাপনা, স্টোর ব্যবস্থাপনা, ক্রয়কার্য সম্পাদন ও তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি ও অধিকতর চৌকস করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে পণ্য ক্রয়ের কারণে সরকারের বিপুল অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। সিএমএসডির প্রতিটি কাজ সুন্দরভাবে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত ২০২ জন জনবল রয়েছে। এছাড়াও জনসম্পৃক্ততা ও তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ রয়েছে। সেখানে প্রত্যেক নাগরিক সিএমএসডির প্রতিটি  কর্মকাণ্ডের তথ্য জানতে পারবেন।

সিএমএসডির তথ্যমতে, কেনাকাটার প্রতিটি ধাপ নিয়মতান্ত্রিকভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে। পিপিআর অ্যাক্ট-২০০৬ ও পিপিআর রুল-২০০৮ সেকশন ৬৮ ও সেকশন ৩২ অনুযায়ী ডিপিএম পদ্ধতিতে কেনাকাটা করা হয়। কেনাকাটা করার ক্ষেত্রে দুই কোটি টাকার নিচে হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমতি নিয়ে, পাঁচ কোটি টাকার নিচে হলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের অনুমতি নিয়ে এবং ৫০ কোটি টাকার নিচের কেনাকাটা হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর অনুমতিতে করা সম্ভব। তবে ৫০ কোটি টাকার বেশি হলে মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। দেশ বিভাগের পর ১৯৪৭ সালের ৩০ নভেম্বর সিএমএসডি কলকাতা থেকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর-সংলগ্ন জেটিতে স্থানান্তরিত হয়। এরপর ২৭ ডিসেম্বর ১৯৪৭ সালে জয়কালী মন্দির থেকে ইডেন বিল্ডিং বর্তমান সচিবালয়। সেখান থেকে সর্বশেষ রাজধানীর তেজগাঁওয়ের আট একর জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রতিষ্ঠানটিতে পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করছেন মো. তোফায়েল ইসলাম। তার দীর্ঘ জীবনের কর্মকাণ্ড, সততা, নৈতিকতা বিশ্লেষণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ডিসেম্বরে তাকে সিএমএসডির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি সিএমএসডির সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখতে কাজ করছেন। উল্লেখ্য, মো. তোফায়েল ইসলাম গত ২৭ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ঔষধাগার বা সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপোর (সিএমএসডি) পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। এই পদে যোগদানের আগে তিনি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (চবক ও বাস্থবক) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সুদীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ও জননিরাপত্তা বিভাগে উপসচিব ও যুগ্মসচিব পদে চাকরি করেছেন। তিনি বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

মাঠ প্রশাসনে তিনি ময়মনসিংহ জেলায় শিক্ষানবিশ সহকারী কমিশনার হিসেবে যোগদান করে সেখানেই প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চাকরির পরবর্তী সময়ে তিনি শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক ও সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটসহ যথাক্রমে সহকারী কমিশনার ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি), সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলা ও কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক হিসেবে দুই বছর ৯ মাসেরও অধিককাল দায়িত্ব পালন করেন। জেলা প্রশাসক থাকাকালীন পরপর দুবার প্রাথমিক শিক্ষায় অবদানের জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক নির্বাচিত হন। তিনি জেলা প্রশাসক হিসেবে শুদ্ধাচার পুরস্কার অর্জন করেন। জেলা প্রশাসক থাকাকালীন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সনদ প্রদান সেবা সহজীকরণে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে জেলাপর্যায়ে জনপ্রশাসন পদক গ্রহণ করেন।

তোফায়েল ১৯৭২ সালের ৬ আগস্ট হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তেজগাঁও পলিটেকনিক সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা থেকে ১৯৮৭ সালে এসএসসি এবং সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, তেজঁগাও ঢাকা থেকে ১৯৮৯ সালে প্রথম বিভাগে এইচএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম শ্রেণীতে মাস্টার্সসহ বিএসসি (অনার্স) ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৭তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে ১৯৯৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন। চাকরিতে যোগদানের পর যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বেডফোর্ডশায়ার থেকে ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টে আরও একটি মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।

Link copied!