Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

গুলিস্তান ট্র্যাজেডিতে নিহত ২০

মো. মাসুম বিল্লাহ

মার্চ ৯, ২০২৩, ১২:২৩ এএম


গুলিস্তান ট্র্যাজেডিতে নিহত ২০
  • প্রধানমন্ত্রীর শোক প্রকাশ
  •  পানিতে বিস্ফোরকের অস্তিত্ব খতিয়ে দেখবে বিএসটিআই
  •  হতাহতদের ২৭ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা
  •  বিস্ফোরণ ‘দুর্ঘটনা’ মনে করছেন ফায়ার সার্ভিস ডিজি

চলতি সপ্তাহের গত চারদিনে চারটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৩০ জন। যেখানে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবে একটি ভবনে বিস্ফোরণে তিনজন মারা যাওয়ার ক্ষতই এখনো শুকায়নি সেখানে ওই ঘটনার দুদিন পরই বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে গুলিস্তান। গত মঙ্গলবার বিকালে গুলিস্তানে সাত তলা একটি ভবনে বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহের গত চারদিনে চারটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল। 

গত শনিবার বিকালে সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন-গ্যাস উৎপাদন কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত হন সাতজন। ওইদিন ভোরেই আবার রাজধানীর গুলশানেও এসি বিস্ফোরণে দগ্ধ হন দুজন। তাদের মধ্যে গোপাল মল্লিক নামে একজনের মৃত্যু হয়। এর আগেও দেশে অনেক ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। গেল বছরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণে ৫১ জনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ২৭ জুন রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ১২ জনের। ওই বিস্ফোরণে আশপাশের অনেক ভবন কেঁপে উঠে। গ্যাসলাইন লিকেজ থেকে ওই বিস্ফোরণ হয় বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য। এর আগে গ্যাসলাইন লিক থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে নারায়ণগঞ্জেও। 

২০২০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জের বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণে ইমামসহ ৩১ জন প্রাণ হারান। গত ২ ফেব্রুয়ারি ভাটারায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়। গত ডিসেম্বরে মিরপুরে এসি বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে আরিয়ান নামে ১৪ বছরের এক কিশোর মারা যায়। ১২ জানুয়ারি সাভারে সিলিন্ডারের লিকেজ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে দগ্ধ হয়ে সাদিয়া নামে সাত বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়। গেল ১৫ অক্টোবর রাজধানীর শ্যামপুরের জুরাইন কবরস্থান রোডে তিতাস গ্যাসের লাইনে কাজ করার সময় বিস্ফোরণে দ্বগ্ধ হন পাঁচ শ্রমিক। সংশ্লিষ্ট সরকারি দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর উদাসীনতায় প্রায় প্রতিদিন বাড়ছে এসব ঘটনা। অন্যদিকে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও। যদিও কেন ঘটছে এসব ঘটনা তা নিয়ে নেই বলার মতো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ। বরং শোক প্রকাশ আর তদন্তের গণ্ডির মধ্যেই রয়ে যাচ্ছে সীমাবদ্ধ। 

তবে গুলিস্তানে বিস্ফোরণের ঘটনায় এক এক করে সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উদাসীনতার বিষয়টি আসছে প্রকাশ্যে। যার মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) উদাসীনতার বিষয়টি এখন বিভিন্ন মহলে সমালোচিত। সমালোচনার তোপে পড়ে ঘটনার একদিন পর দুর্ঘটনা কবলিত ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে গতকাল সাইনবোর্ড টানায় ডিএসসিসি। সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ, এতে সর্ব-সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। এরপর ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনটি রাখা হবে, নাকি ভেঙে ফেলা হবে এ বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানায় সংস্থাটির মহাব্যবস্থাপক (পরিবহন) হায়দার আলী। যদিও দুর্ঘটনার আগে দুর্ঘটনা রোধে সিটি কর্পোরেশনের কোনোরকম তৎপরতাই দেখা যায়নি।

একইসঙ্গে দায়িত্বশীল আরও একটি সংস্থা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। যাদের কার্যক্রম নিয়ে রয়েছে হাজারো প্রশ্ন। এরই মধ্যে ঢাকায় গড়ে উঠেছে হাজার হাজার পরিকল্পিত-অপরিকল্পিত বহুতল ভবন। যার সঠিক পরিসংখ্যানও জানা নেই সংস্থাটির। আর সেসব ভবনই আজ অগ্নিগর্ভে পরিণত করেছে ঢাকাকে। যার সর্বশেষ উদাহরণ গুলিস্তানের বিস্ফোরণ। যা নিয়ে কোনো ধারণাই নেই খোদ রাজউক পরিচালকেরও। তিনি জানেনই না ভবনটি কবের তৈরি কিংবা সরকারের নিয়ম মেনে তৈরি হয়েছে কি-না?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির অসংখ্য অবৈধ লাইন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পুরো নগরজুড়ে, যার ফলে অনেক জায়গায় লিকেজ তৈরি হচ্ছে, যা থেকে হতে পারে মারাত্মক বিস্ফোরণ। এছাড়া শহরের ভবনগুলোতে অভ্যন্তরীণ সংযোগ লাইনগুলোও নিয়মিত পরিচর্যা করা হয় না। ফলে প্রায়শই শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে রাস্তার পাশের ভবনগুলো পর্যাপ্ত জায়গা না রাখায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির লাইন, যা ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে পুরো ভবনকেই। আবার স্যুয়ারেজের লাইন ঠিক না থাকায় বা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম না করার কারণে গ্যাস জমে যাচ্ছে সেপটিক ট্যাংকে। এর বাইরে শীতের শেষের দিকে এসি বিস্ফোরণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হলো নিম্নমানের এসি ব্যবহার করা এবং গরমের সময় কয়েক মাস বন্ধ রেখে সার্ভিসিং না করিয়েই এসি ব্যবহার করা। এছাড়া পুরোনো ভবনগুলোর ভেতরে এক সঙ্গে অনেক এসি ব্যবহার করা হয় নির্ধারিত দূরত্ব না মেনেই। যেগুলোর কোনো একটিতে গ্যাস লিকেজ হলে সবগুলোই বিস্ফোরিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।

সরকারি সংস্থাগুলোর উদাসীনতায় ঘটে যাওয়া সব বিস্ফোরণের ঘটনার মধ্যে সবশেষ গুলিস্তানের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কাতারে অবস্থানকালে মঙ্গলবার রাতে এক শোকবার্তায় শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নিহতদের আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনার পাশাপাশি আহতদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন তিনি।

গতকাল ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ জানানো হয় বিস্ফোরণের ঘটনায় ৯৫ শতাংশ উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, এখন অনুসন্ধানের কাজ চলছে। ভেতরে কেউ আটকা আছে কিনা, তা দেখা হচ্ছে। এছাড়া পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস। গতকাল গঠিত এ কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্তকাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক দিনমনি শর্মা, ফায়ার সার্ভিস ট্রেনিং কমপ্লেক্সের ভাইস প্রিন্সিপাল আনোয়ারুল হক এবং উপসহকারী পরিচালক শামস আরমান। 

গুলিস্তানের ঘটনার পর এখন সরকারি সংস্থাগুলোর ঠেলাঠেলিও আসছে প্রকাশ্যে। এর মধ্যে র্যাব বলছে, স্বাভাবিক কোনো বিস্ফোরণ নয়, এটি একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ। এটি গ্যাস লিকেজের কারণে হয়ে থাকতে পারে, কিংবা অন্য কোনোভাবে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। তবে এ ঘটনা এসি থেকে ঘটার আশঙ্কা খুবই কম।’  আর তিতাস বলছে, এখন পর্যন্ত গ্যাসের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। আর রাজউক তো জানেই না দুর্ঘটনা কবলিত ভবনটি কবের তৈরি। এদিকে গুলিস্তানের এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অনেকেই। আর যারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের অবস্থাও শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন। 

বিস্ফোরণের পর ব্যবসায়ীকে তুলে নেয়ার অভিযোগ : গুলিস্তানে ধসে পড়া একটি দোকানের মালিককে তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিরুদ্ধে। ওই ব্যবসায়ীর নাম আব্দুল মোতালেব মিন্টু। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম বাংলাদেশ স্যানিটারি। তবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমরা ওই ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এসেছি।’

ভবনের পানিতেই বিস্ফোরক ছিল কি-না খতিয়ে দেখবে বিএসটিআই : রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারের সাত তলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের কারণ খুঁজতে ওই ভবনের নিচ তলায় জমে থাকা পানি পরীক্ষা করবে বাংলাদেশ স্ট্যাডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই)। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক এবং মিডিয়া প্রধান রিয়াজুল হক বলেন, ‘বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের চাহিদা অনুযায়ী শিল্প সচিব ও বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালকের নির্দেশে একটি প্রতিনিধি দল সকাল থেকে উদ্ধার অভিযানে সহায়তার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ভবনটির নিচ তলায় জমে থাকা চার বোতল পানি আমাদের বিএসটিআই ল্যাবে পরীক্ষা করার জন্য সরবরাহ করেছে। আমরা এটি পরীক্ষা করে দেখব, এই পানিতেই কোনো বিস্ফোরক উপাদান আছে কি না।’ 

হতাহতদের ২৭ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা : বিস্ফোরণের এ ঘটনায় হতাহতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মোট ২৭ জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসক। এর মধ্যে ২০ জন নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা ও আহত ১১ জনকে ২৫ হাজার টাকা নগদ সহায়তা দেয়া হয়েছে।

বিস্ফোরণ অন্তর্ঘাতমূলক কি-না তদন্তের প্রয়োজন (মানবাধিকার কমিশন ): জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা ধ্বংসস্তূপ পর্যবেক্ষণ করেছি। কি কারণে এমন ঘটনা ঘটল, এটা তদন্ত করা দরকার। এটি স্বাভাবিক কেমিক্যাল বিস্ফোরণের ঘটনা না কি অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড, সেটা তদন্তের প্রয়োজন আছে।’

বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন কেউই শঙ্কামুক্ত নয় —ডা. সামন্ত লাল : শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ১০ জনের কেউই শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়কারী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, এই ঘটনায় আমাদের এখানে ১১ জন রোগী এসেছিল। এর মধ্যে একজনকে বার্ন না থাকার কারণে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকি ১০ জন এখানে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসাধীন ১০ জনের মধ্যে তিনজন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে দুজনকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। বাকি সাতজন এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন কেউই শঙ্কামুক্ত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেকের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। কারো ৮০ শতাংশ, কারো ৯০ শতাংশ, কারো ৫০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টা না যাওয়া পর্যন্ত কাউকেই শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।

ক্যাফে কুইন তিন তলা থেকে কীভাবে ৭ তলা, জানেন না রাজউক পরিচালক : বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ক্যাফে কুইন ভবন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। ভবনটি কবে তৈরি, সরকারের নিয়মকানুন মেনে বানানো হয়েছে কি-না, এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) একজন পরিচালক। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, শবেবরাতের ছুটি শেষে অফিস খুললে সব দেখে বলতে পারবেন। স্থানীয় এক বাসিন্দার কাছ থেকে কিছু তথ্য জানা গেলেও তিনি নিজের নাম প্রকাশ করতে চান না। তার ভাষ্য, ভবনটি তৈরি হয় চার দশক আগে। শুরুতে ছিল তিনতলা। পরে তা আরও চারতলা বাড়ানো হয়। যার হাত ধরে ভবনটি তৈরি হয়, তিনি মারা গেছেন এক দশক আগে। এখন তার ছেলেদের মালিকানায় রয়েছে ভবনটি। ভবনের নিচের দুটি ফ্লোরে ছিল মূলত স্যানিটারি সামগ্রীর দোকান ও গুদাম, তৃতীয় তলায় ছিল ‘ক্যাফে কুইন’ নামে  রেস্তোরাঁ, যেটি বেশ কয়েক বছর ধরে বন্ধ। বন্ধ হয়ে যাওয়া ওই খাবারের দোকানের কারণেই সাত তলা দালানটি ‘ক্যাফে কুইন ভবন’ নামে পরিচিতি পেয়েছে।

বিস্ফোরণকে ‘দুর্ঘটনা’ মনে করছেন ফায়ার সার্ভিস ডিজি : বিস্ফোরণের ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলেই মনে করছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দীন। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি নিছক দুর্ঘটনা। তারপরও তদন্ত চলছে। তদন্তের পর পরিপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং ঢাকার পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকও এদিন দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। ফিরে যাওয়ার সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের সাথে তেমন কিছু না বললেও পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে। এখনো বিস্ফোরকের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।’

জমে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ —সুরক্ষা সচিব : রাজধানীর গুলিস্তানের পাশে সিদ্দিক বাজারে একটি ভবনে যে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে এর প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি। এ ব্যাপারে তদন্তের পর বলা যাবে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, জমে থাকা গ্যাস থেকে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন। ভবনটিতে আর কেউ আটকা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনায় র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিভিন্ন টিম কাজ করছে। পুরো বিষয়টা তদন্ত শেষেই জানা যাবে। কিন্তু আমাদের প্রাথমিক ধারণা, জমে থাকা গ্যাস থেকে এখানে বিস্ফোরণ হয়েছে।

 

Link copied!