মার্চ ১৮, ২০২৩, ১১:২১ এএম
অভিসংশনসংক্রান্ত কাগজপত্র জাল থাকার অভিযোগে ভারতের সাত শতাধিক শিক্ষার্থীকে ফেরত পাঠাচ্ছে কানাডা। সম্প্রতি তারা দেশটির সীমান্ত নিরাপত্তা সংস্থার (সিবিএসএ) কাছ থেকে দেশে ফিরে যাওয়ার চিঠি পেয়েছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পড়াশোনার জন্য এসব শিক্ষার্থী ২০১৮-১৯ সালে কানাডায় যান। এই শিক্ষার্থীরা কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের (পিআর) জন্য আবেদন করার পর ভর্তির ‘অফার লেটার’ যাচাই-বাছাইয়ে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। পরবর্তী সময়ে সিবিএসএ নিশ্চিত হয় যে, এই শিক্ষার্থীদের ‘অফার লেটার’ আসল নয়। এসব শিক্ষার্থী পাঞ্জাবের জলান্ধরে অবস্থিত এডুকেশন মাইগ্রেশন সার্ভিসেসের মাধ্যমে শিক্ষা ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন। এডুকেশন মাইগ্রেশন সার্ভিসেসের প্রধান ব্রিজেশ মিশ্র শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রিমিয়ার ইনস্টিটিউট হাম্বার কলেজে ভর্তি ফিসহ ১৬ লাখ টাকার বেশি নিয়েছেন। এতে উড়োজাহাজের টিকিট ও সিকিউরিটি ডিপোজিট অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এসব শিক্ষার্থীর অধিকাংশই তাদের পড়াশোনা শেষ করে কাজ করারও অনুমতি পেয়েছেন। কেউ কেউ চাকরির অভিজ্ঞতাও অর্জন করেছেন। তবে স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদন করেই এই সমস্যার মুখোমুখি হলেন তারা। শিক্ষার্থীদের কানাডায় পাঠানোর কাজ করা জলন্ধরভিত্তিক একজন পরামর্শক বলেছেন, এ ধরনের প্রতারণার সঙ্গে একাধিক কারণ ও চক্র জড়িত। কলেজের ভুয়া অফার লেটার থেকে শুরু করে ভিসা আবেদনের জন্য শিক্ষার্থীদের ফি প্রদানের ভুয়া রসিদও দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে এমন কলেজের অফার লেটার দেয়া হয়, কানাডায় যাওয়ার পর সেখানে শেষ পর্যন্ত তারা পড়তে পারেননি। তাদের অন্য কোনো কলেজে স্থানান্তরিত করা বা পরবর্তী সেমিস্টারের জন্য অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। আরেক পরামর্শক বলেন, পড়াশোনার জন্য বিপুলসংখ্যক ভারতীয় শিক্ষার্থী কানাডায় যেতে চান।
এই বিষয়কে পুঁজি করে কিছু প্রতারক এজেন্ট কানাডাভিত্তিক বেসরকারি কলেজের সঙ্গে যোগসাজশে এসব কাজ করে। ভুক্তভোগী ওই ৭০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন বলেন, তিনি কানাডার একটি সরকারি কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছেন। ভিসার আবেদন করার সময় তাকে বেসরকারি কলেজে ভর্তির অফার দেয়া হয়েছিল। কিন্তু কানাডায় যাওয়ার পর তাকে সরকারি কলেজে ভর্তির কথা বলা হয়। এ জন্য এজেন্ট তার ফি ফেরত দিয়েছিল। এমনকি নতুন কলেজে ভর্তির জন্য সহায়তা করেছিল। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, এজেন্ট তাদের ফি ফেরত দিয়েছে। এ কারণে তারা এজেন্টকে সন্দেহ করেননি। তবে এ বিষয়ে কানাডা সরকারকে কিছু অবহিত করা হয়নি। এদিকে এ ঘটনার পর একজন পরামর্শক বলেছেন, এসব ক্ষেত্রে যে কলেজ ভর্তির অফার লেটার দিয়েছিল, তাদের সম্পৃক্ততা যাচাই করা উচিত। কলেজ থেকে আসলেই এই অফার লেটার দেয়া হয়েছিল, নাকি এজেন্ট ভুয়া অফার লেটার তৈরি করেছিল। অধিকাংশ শিক্ষার্থী এ ধরনের বিষয় জানেন না। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ৭০০ শিক্ষার্থীর এখন একমাত্র বিকল্প হলো আদালতে তাদের ফেরত পাঠানোর নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করা। যদিও এই প্রক্রিয়া চার বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।