Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫,

লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে কৃষিঋণ

রেদওয়ানুল হক

মার্চ ২৪, ২০২৩, ০৫:৩০ এএম


লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে কৃষিঋণ
  • আট মাসে বিতরণ হয়েছে ২১ হাজার ৬৬ কোটি টাকা
  • আগের বছরের চেয়ে বিতরণ বেড়েছে আট শতাংশ
  • আট মাসেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে ১২ ব্যাংক

 চলতি অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত আছে। প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) বিতরণকৃত ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারলে বছর শেষে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আগের বছরও লক্ষ্যের চেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ হয়েছিল এ খাতে।  এক্ষেত্রে বেশকিছু ব্যাংক বরাবরই ভালো করে আসছে। ইতোমধ্যে শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে ১২ ব্যাংক। তবে ১৪টি ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও বিতরণ করতে পারেনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ব্যাংক খাতে ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। গত আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ব্যাংকগুলো ২১ হাজার ৬৬ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার ৬৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। মাসভিত্তিক লক্ষ্য ধরলে বিতরণকৃত ঋণের হার ১০২ শতাংশ। এ ধারায় ঋণ বিতরণ হলে বছর শেষে প্রায় ৩২ হাজার কোটিতে দাঁড়াবে। আগের বছরের একই সময়ে বিতরণ হয়েছিল ১৯ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা। সে হিসেবে গত বছরের তুলনায় বেড়েছে এক হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা বা আট শতাংশ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক আমার সংবাদকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কৃষিঋণ বিতরণের বিষয়টি তদারকি করছে। ব্যাংকগুলোকে নিয়মিত দিকনির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি বিভাগীয় পর্যায়ে সফর করে কৃষিঋণ বিতরণের তদারকি করা হয়েছে। এসব কার্যক্রমের ফলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।’

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত আট মাসে রাষ্ট্রমালিকানার ব্যাংকগুলো আট হাজার ৬২৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা বা লক্ষ্যমাত্রার ৭৩ দশমিক ৪২ শতাংশ বিতরণ করেছে। আর বিদেশি ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো ১২ হাজার ৪৩৪ কোটি বা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৬৪ দশমিক ৯২ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। দেশে প্রতিবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি কৃষিঋণ বিতরণ করে আসছে কিছু ব্যাংক। আবার কিছু ব্যাংক আছে যারা প্রতিবছরই ব্যর্থ হয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে। সম্প্রতি কৃষি খাতে ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলে তা অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণের জন্য  এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট কমন ফান্ড (বিবিএডিসিএফ) গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই নীতিমালা অনুযায়ী, কৃষি ও পল্লীঋণ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিতরণ করতে না পারলে অবশিষ্ট অর্থ এই ফান্ডে জমা রাখতে হবে। কৃষি খাতে অধিক ঋণ দিতে সক্ষম ব্যাংকগুলোকে এই তহবিল থেকে অর্থ দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জন করা ব্যাংকগুলো হলো : ব্যাংক আল-ফালাহ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, হাবিব ব্যাংক, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এনএ, এইচএসবিসি এবং উরি ব্যাংক।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, আট মাসে শস্য খাতে বিতরণ হয়েছে ১০ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। সেচ সরঞ্জাম কিনতে দেয়া হয়েছে ১৭৯ কোটি, কৃষি সরঞ্জাম কিনতে ১৪৯ কোটি, গবাদিপশু এবং হাঁস-মুরগির খামারে চার হাজার ৪৩৯ কোটি, মৎস্য খাতে দুই হাজার ৫৭৭ কোটি, শস্য গুদামজাত ও বিপণনে ১০৪ কোটি, দারিদ্র্য দূরীকরণ খাতে এক হাজার ২৪৭ কোটি এবং অন্যান্য খাতে দুই হাজার ৩৩১ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা ধরা হলেও ব্যাংকগুলো তারচেয়েও বেশি বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১০২ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে কৃষিঋণ আদায়ও বেড়েছে। অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) কৃষকদের কাছ থেকে ঋণ আদায় হয়েছে ২০ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। যদিও ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে এই খাত থেকে ঋণ আদায় হয়েছে ১৭ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা।

Link copied!