এপ্রিল ২, ২০২৩, ১১:৫৬ এএম
কালোবাজারি রোধে ট্রেনের টিকিট ক্রয়ে সহযাত্রীর নামের সংযুক্তি বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এর মাধ্যমে ‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’ নীতি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ, এখন থেকে যারা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে একাধিক রেল টিকিট কিনবেন, নিজের সহযাত্রীর নাম তাদের অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
গতকাল শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে রেলওয়ের টিকিট বিক্রির সহযোগী প্রতিষ্ঠান সহজ ভিনসেন জেভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ দেবনাথ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, রেলওয়ের চাহিদা অনুযায়ী টিকিটে সহযাত্রীর নাম এখন থেকে উল্লেখ থাকবে। এনআইডি ও ছবি যুক্ত হবে কিনা প্রশ্ন করা হলে সন্দ্বীপ জানান, এখনও রেলওয়ে এমন নির্দেশনা দেয়নি। বলা হলে যুক্ত করা হবে।
বিষয়টি নিয়ে সহজ ভিনসেন জেভির ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, আগামী ৭ এপ্রিলের পর থেকে টিকিট কেনার প্রক্রিয়াটি শেষ করতে সহযাত্রীদের নাম (তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র/ ফটো আইডিতে দেয়া) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভ্রমণের সময় যাত্রীদের অবশ্যই তাদের এনআইডি-ফটো আইডি সঙ্গে রাখতে হবে। পরে বিষয়টি নিশ্চিত হতে ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, একাধিক টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সিট সিলেক্ট করার পরের স্টেজে গিয়ে প্যাসেঞ্জার-১ এর ক্ষেত্রে যে অ্যাকাউন্ট দিয়ে সিলেক্ট করা হয়েছে, তার নাম বসানো আছে।
প্যাসেঞ্জার ২/৩/৪ এর জায়গায় স্টার মার্ক করা একটি করে নামের জায়গা খালি রাখা হয়েছে। সেখানে নাম না লেখা পর্যন্ত ‘প্রসিড’ অপশনটি আসবে না। অর্থাৎ আপনি আপনার টিকিটগুলো কেনার কাজটি সম্পন্ন করতে পারবেন না। ওই ফেসবুক পেজে ৯টা ১৩ মিনিটে দেয়া আরেক পোস্টে বলা হয়েছে, অনলাইন রিফান্ড শুধুমাত্র ই-টিকিট ওয়েবসাইট এবং রেল সেবা অ্যাপ থেকে কেনা টিকিটের জন্য প্রযোজ্য। আপনার ক্রয়ের হিস্ট্রিতে থাকা পছন্দমতো টিকিটের জন্য রিফান্ড বোতামে ক্লিক করলে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আপনার মোবাইল নম্বরে একটি ওটিপি পাঠানো হবে। সেই ওটিপি সাবমিট করা হলে টিকিট ফেরত প্রক্রিয়া শুরু হবে। রিফান্ডের টাকা কিছু দিনের মধ্যে ফেরত দেয়া হবে।
আরও বলা হয়, মনে রাখবেন একবার ওটিপি নিশ্চিতকরণ পাঠানো হলে, নির্বাচিত পিএনআরের জন্য বুক করা আসনগুলো ছেড়ে দেয়া হবে। যাত্রা তারিখের আগে কাউন্টার থেকে আপনার অনলাইন টিকিট প্রিন্ট করা হলে, তা অনলাইন রিফান্ড সিস্টেম থেকে ফেরত পাওয়ার যোগ্য হবে না। এটি শুধুমাত্র স্টেশন কাউন্টার থেকে ফেরতের জন্য যোগ্য হবে।
গত ২২ মার্চ দুপুরে রেল ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, একজন যাত্রী ঈদের অগ্রিম টিকিট ও ফেরত যাত্রার টিকিট উভয় ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ একবার এবং প্রতিক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট ক্রয় করতে পারবেন। একজন নিবন্ধন করা যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহযাত্রীদের এনআইডি অথবা জন্ম নিবন্ধন নম্বর ইনপুট দেয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
এদিকে আন্তঃনগর ট্রেনে যাত্রার ১০ দিন আগে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ৮টায় কাউন্টার ও অনলাইনের মাধ্যমে যুগপৎভাবে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। যতক্ষণ টিকিট থাকবে ততক্ষণ অনলাইন বা কাউন্টার থেকে টিকিট কাটা যাবে। অনলাইন বা কাউন্টারে পৃথক কোনো কোটা নেই।
অগ্রিম টিকিট বিক্রির বিষয়ে গত ২২ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছিলেন, ১ এপ্রিল থেকে যাত্রার ১০ দিন আগের আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। তবে সময় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত সমন্বয়ের লক্ষ্যে ১ এপ্রিল ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। এরপর ২ এপ্রিল থেকে নতুন নিয়মে ১০ দিনের অগ্রিম টিকিট ব্যবস্থা কার্যকরী হবে।
এদিকে, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অগ্রিম টিকিট বিক্রি ৭ এপ্রিল থেকে শুরু করার কথা রয়েছে। এবারের ঈদুল ফিতরের অগ্রিম ও ফেরত যাত্রার টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই সুবিধা পেতে যাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।