Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪,

ঈদের আগেই ঢাকায় ঈদ!

ফাঁকা হচ্ছে রাজধানী ঢাকা

মো. মাসুম বিল্লাহ

এপ্রিল ২০, ২০২৩, ০১:৩০ এএম


ফাঁকা হচ্ছে রাজধানী ঢাকা
  • ঢাকার রাস্তায় এখন কোনো সিগন্যাল নেই
  • পরিবার নিয়ে ফাঁকা সড়কে ঘুরছে মানুষ  
  • প্রতিদিনের ঘণ্টার দূরত্ব ১০ মিনিটেই পার
     

নাজমুল ইসলাম। মতিঝিলে একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। থাকেন আজিমপুরে। প্রতিদিন মতিঝিল পৌঁছতে তার ৪০-৫০ মিনিট সময় লাগে। কখনো কখনো ঘণ্টাও পার হয়। গতকাল বুধবার তিনি ১০ মিনিটে পৌঁছে গেছেন। নাজমুল বলেন, গত একটা মাস অনেক কষ্ট হয়েছে অফিসে আসতে। ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে অনেক দিন। বাটা সিগন্যাল, কাঁটাবন, শাহবাগ, মৎস্য ভবন, পল্টন জ্যামে অতিষ্ঠ ছিলাম। আজকে মাত্র ১০ মিনিটে পৌঁছে গেছি। রাস্তায় কোনো জ্যাম নেই। ঢাকার মানুষদের কাছে যেন আজ থেকেই ঈদ শুরু হয়েছে। ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা। যারা ঢাকার বাসিন্দা তারা অনেকেই এখন পরিবারের লোকজনদের নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছেন। পবিত্র শবেকদর ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গতকাল বুধবার থেকে শুরু হয়েছে সরকারি ছুটি। ছুটির প্রথম দিনেই রাজধানীর রাস্তা অনেকটাই মানুষের চাপমুক্ত ছিল। 

গাবতলী থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, মিরপুর রোড, জাহাঙ্গীরগেট এলাকা, বাংলামোটর, রামপুরা, বনশ্রী, মৌচাক, মগবাজার, খিলগাঁওসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি সড়কে যানবাহন তেমন একটা চোখে পড়েনি। রাজধানীর পল্টনে একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আজকে আমার কাছে ঈদের আনন্দ লাগছে। আমি প্রতিদিন মিরপুর থেকে জাহাঙ্গীর গেট হয়ে নাবিস্কো যাই। অন্যান্য দিনে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে আজ ২০ মিনিটের মতো সময় লেগেছে। রাস্তা একেবারেই ফাঁকা।’ রাস্তায় গাড়ি কম, ফাঁকা ঢাকা খুবই সুন্দর ও স্বস্তির।   

খিলগাঁও থেকে ফার্মগেটে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আলী রিয়াজ বলেন, ‘খিলগাঁও থেকে ফার্মগেটে আসতে আমার সাধারণ সময় প্রায় এক ঘণ্টা লাগে। আজ ১০ মিনিটে চলে এসেছি। কোথাও কোনো সিগন্যালে দাঁড়াতে হয়নি। রাস্তায় শুধু রিকশা আর কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি দেখেছি। পাবলিক বাস ছিল খুব কম।’ গরমও তেমন অনুভব হয়নি। 

জিগাতলা এলাকার সিএনজিচালক ফকির হোসেন জানান, ‘গতকাল রাত থেকেই ঢাকা ফাঁকা হতে শুরু করেছে। আমি সাধারণ সময়ে প্রতিদিন ১০০০ টাকার মতো আয় করি। গতকাল আয় হয়েছে ৬০০ টাকা। ঢাকায় এখন আর তেমন যাত্রী দেখছি না। অলস সময় পার করছি। আগে মানুষজন অফিসে যেত। এখন যারা বের হচ্ছেন তারা বেশিরভাগ পরিবারের লোকজন নিয়ে বের হচ্ছেন। যাত্রাবাড়ী থেকে শিকড় পরিবহনের চালক আরিফ বলেন, গতকালও দেখা গেছে আমার গাড়ির সব সিট পূর্ণ থেকে দাঁড়ানোর জায়গাও ছিল না। কিন্তু এখন আমার গাড়ির অর্ধেক যাত্রীও নেই। রাস্তায় যাত্রী নেই বললেই চলে। 

ঢাকার রাস্তা ফাঁকার বিষয়ে যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, ‘২০ তারিখ ছুটি ঘোষণা করা এবং এ বছর মহাসড়কে মোটারসাইকেল চলার অনুমতি দেয়ায় এই সুফল পাওয়া গেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের হিসাব মতে, ঢাকা থেকে প্রায় ১২ লাখ মানুষ মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরবে। মোটরসাইকেল চলাচলে নিষাধাজ্ঞা দিলে এই ১২ লাখ মানুষকে পাবলিক ট্রান্সপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হতো। এতে করে রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশ পথে ভিড় দেখা যেত এবং এর কারণে যানজটও তৈরি হতো।’

 

Link copied!