Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

চিত্রনায়ক ফারুককে তারকাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি

মোঃ সোহাগ বিশ্বাস

মোঃ সোহাগ বিশ্বাস

মে ১৭, ২০২৩, ০৮:২০ এএম


চিত্রনায়ক ফারুককে তারকাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি

বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি ফারুকের মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন মিডিয়াপাড়া। শিল্পীরা তাদের শোক প্রকাশ করছেন বিভিন্নভাবে। ‘মিয়া ভাই’কে নিয়ে তারকাদের অনুভূতি তুলে ধরছেন মো. সোহাগ বিশ্বাস

আমাদের ইতিহাসটা অনেক লম্বা: আলমগীর
এখন স্মৃতিচারণ করার মতো মন-মানসিকতা নেই। চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুর পর গণমাধ্যমে এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিনেতা আলমগীর।
আলমগীর বলেন, চলচ্চিত্রে নায়ক ফারুক এবং নায়ক আলমগীর হওয়ার পর আমরা পরিচিত হইনি। তার আগে থেকে আমরা পরিচিত। ১৯৬৪ সাল থেকে আমরা বন্ধু, আমরা ভাই। সে (ফারুক) ৭০-এ নায়ক হয়েছে, আমি ৭২-এ। আমাদের ইতিহাসটা অনেক লম্বা। অনেক কথা আছে, পরে বলব। 

অত্যন্ত খারাপ লাগছে: ববিতা
অত্যন্ত খারাপ লাগছে। কারণ, কদিন আগেই তার স্ত্রীর বোনের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। বললেন, ফারুক ভাইয়ের রক্ত সঞ্চালনে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া তিনি ঠিকঠাক আছেন। শিগগিরই ঢাকায় ফিরবেন। আমি তা শুনে খুশি হলাম। কিন্তু পরে জানতে পারলাম ফারুক ভাই চলে গেলেন! খুব খারাপ লাগছে। ববিতা বললেন, ক্যারিয়ারের প্রথম থেকেই ফারুক ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করেছি। সেসব ছবি মাইলস্টোন হয়ে আছে। ‘নয়নমণি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘আবার তোরা মানুষ হ’— এ সবই ছিল বিখ্যাত ছবি।

ফারুক ভাই অমায়িক এক মানুষ ছিলেন: মিশা সওদাগর
ফারুক ভাই সম্মানের দিক থেকে আমার কাছে একজন পীর সমতুল্য ছিলেন।  তিনি কারো ওপর রাগ করলে সেই ব্যক্তি যদি কখনো সামনাসামনি এসে স্যরি বলতেন, তাহলে ফারুক ভাইয়ের রাগ মুহূর্তেই পানি হয়ে যেত। এমনকি সেই ব্যক্তিকে বুকে জড়িয়ে নিতেন তিনি। তার মতো মানুষ দ্বিতীয়জন দেখিনি।
কথাগুলো বলছিলেন অভিনেতা মিশা সওদাগর। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নায়ক ফারুকের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন মিশা সওদাগর। তিনি বলেন, চিত্রনায়ক ফারুক ভাই অত্যন্ত অমায়িক এক মানুষ ছিলেন।

এ মায়া আর পাব না কখনো: শাবনূর
কিংবদন্তি অভিনেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। ‘মিয়া ভাই’ এখন আর আমাদের মাঝে নেই। কথাটি শুনেই চমকে গেলাম। 
দেখা হলে কত মায়া দেখাতেন ফারুক ভাই। এ মায়া আর পাব না কখনো। চলে গেলেন না ফেরার দেশে। আর কখনো কথা হবে না, দেখা হবে না ভাবতেই চোখে জল চলে আসে। তার মৃত্যুসংবাদ কয়েকবার মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছিল। এবারও খবরটি যদি মিথ্যা হতো, তাহলে স্বস্তি পেতাম— বললেন অভিনেত্রী শাবনূর।

আমরাও মৃত্যুর অপেক্ষায় দিন গুনছি: ইলিয়াস কাঞ্চন
এখন আমরাও মৃত্যুর অপেক্ষায় দিন গুনছি। কখন যে চলে যাই বুঝতে পারছি না। বলতে গেলে সবাই চলে যাচ্ছেন। রাজ্জাক ভাই, ফারুক ভাই, জাফর ইকবাল— মানুষগুলো যখন ছিল, তখন চলচ্চিত্রের সুদিন ছিল। এ বিষয়ে নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আমি নিজেও ফারুক ভাইয়ের ছবি দেখে চলচ্চিত্রে এসেছি। ফারুক ভাই যেসব ছবিতে অভিনয় করেছেন, সেগুলো সত্যিই অসাধারণ। কথার ফাঁকে তিনি বলেন, ‘গোলাপি এখন ট্রেনে, নয়নমণি, লাঠিয়াল ছবিগুলোর যে আবেদন ছিল, সেগুলো সত্যিই ভীষণ বাস্তব। চরিত্রগুলোকে মানুষ ভালোবাসত। সে সময় মানুষ এসব ছবির জন্যই হলে যেত।’

আমি তাকে ‘দুলু’ বলে ডাকতাম: সোহেল রানা
সবাই তাকে ফারুক নামে চেনে। ‘মিয়া ভাই’ও বলে। আর আমি ‘দুলু’ বলে ডাকতাম। কারণ, তার ডাকনাম ছিল দুলু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলে যখন ছিলাম, তখন সে ছাত্রলীগে আমার আন্ডারেই ছিল। মোট কথা, ছোটবেলা থেকেই ওকে আমি চিনতাম, জানতাম। তুখোড় ছাত্রনেতা ছিল। খুব চঞ্চলও বলা চলে। সে এভাবে চলে যাবে কখনো ভাবিনি। তার এভাবে চলে যাওয়াটা মেনে নেয়া খুব কঠিন, খুব কষ্টের— বললেন এক সময়ের তুখোড় অভিনেতা সোহেল রানা। 

চলচ্চিত্র একজন অভিভাবককে হারাল: শাকিব খান
কদিন পরপর যখন ফারুক ভাইয়ের খবর নিতাম, শুনতাম তিনি ভালো হয়ে গেছেন, সুস্থ হয়ে গেছেন। আমিও ভাবতাম কদিন পরই বুঝি চলে আসবেন। কথাগুলো বলছিলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের শীর্ষ অভিনেতা শাকিব খান। এ সময় তার কণ্ঠ আবেগে বাষ্পরুধ্য হয়ে আসছিল। গতকাল মঙ্গলবার  ফারুকের জানাজা ও শোক বইয়ে শোকবার্তা লিপিবদ্ধ শেষে এ কথা বলেন শাকিব খান।
শাকিব খান বলেন, ফারুক ভাই সংসদ সদস্য হওয়ার পর আমি তাকে বলতাম, আমার ভাবতেও ভালো লাগে আমি যে এলাকায় থাকি, সে এলাকার এমপি হলেন তিনি। ফারুক ভাই চলে যাওয়ায় চলচ্চিত্রের মানুষ বিশাল এক অভিভাবককে হারাল।

ঋণ খেলাপি অভিযোগ ভিত্তিহীন: খোরশেদ আলম খসরু

নায়ক ফারুকের ঋণখেলাপির অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন প্রযোজক সমিতির সাবেক সভাপতি, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য ও প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু।  তিনি বলেন, একটি পক্ষ ছড়াচ্ছে যে, তিনি পাঁচ হাজার কোটি টাকা ঋণখেলাপি; অথচ এটি প্রোপাগান্ডা। খসরু বলেন, তিনি এক কোটি টাকার মতো যে ঋণ নিয়েছেন, তার বদলে ব্যাংকে যে সম্পত্তি মর্টগেজ রেখেছেন— তার মূল্য আরও বেশি। মর্টগেজ সম্পত্তি বিক্রি করে ব্যাংকের ঋণ তো শোধ হবে, তারপরও সেখানে যে টাকা থাকবে, সেটা তার পরিবার পাবে। 
 

Link copied!