মে ২৫, ২০২৩, ১২:০০ এএম
দেশের বৃহত্তম সিটি কর্পোরেশন গাজীপুরে আজ ভোট। শুধু নগরবাসী নয়, জেলাসহ দেশ-বিদেশের নজর এখন এই নির্বাচনে। ইভিএম মেশিনে প্রায় ১২ লাখ ভোটার ভোট দেবেন। এ সিটি নির্বাচনকে বর্তমান কমিশন ও সরকার খুব গুরুত্বের সাথে দেখছে। একদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঘরে বিদ্রোহী দোসর, অন্যদিকে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি অংশ নেয়নি। নির্বাচনের ওপর কড়া নজর রাখছে আন্তর্জাতিক মহল ও পশ্চিমা বিশ্ব। এরই মধ্যে প্রার্থী ভোটারদের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। রাজনৈতিক মাঠে কালো টাকা ছড়িয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে। সামগ্রিক পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচনের আগে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের জন্য এ নির্বাচন টেস্টকেস হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব সিটিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন হলে ইসির ওপর রাজনৈতিক দলের আস্থা কিছুটা হলেও বাড়তে পারে। তবে এ ভোটে ব্যাপক অনিয়ম-কারচুপি হলে রাজনৈতিক দলসহ দেশ-বিদেশে আস্থা হারাবে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। ইতোমধ্যে গাজীপুরের ভোটে ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৫১টি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রশাসন সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা বললেও সরকার সমর্থিত ব্যতীত অন্যরা আশঙ্কার কথা জানাচ্ছেন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। ইতোমধ্যে নির্বাচন উপলক্ষে ভোটের দিনটিকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে নির্বাচনি এলাকায়। নির্বাচনি প্রচার শেষ হয়েছে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর থেকে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন আমার সংবাদকে বলেন, ‘গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা ইসির জন্য সহজ হবে। আর যদি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হয় তাহলে এর প্রভাব জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর মারাত্মকভাবে পড়বে। সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে ইসিকে অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়তে হবে। তাই এটি এখন স্বাভাবিক যে, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ইসির জন্য একটি পরীক্ষা। তাই ইসিকে সব ধরনের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’ এদিকে ইসিও কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। ‘?নৌকার প্রার্থী ছাড়া কাউকে ভোটকেন্দ্রে আসতে দেয়া হবে না’ বলে ভোটের আগে ভীতিকর বক্তব্য দেয়ার দিয়েছিলেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. আজিজুর রহমান। গতকাল বিকেলে তার প্রার্থিতা বাতিল করে দেয় নির্বাচন কমিশন। ইসির এ সিদ্ধান্তে এখন গাজীপুরে অনেকটা স্বস্তির হাওয়া বইছে।
নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাকের পার্টিসহ পাঁচটি রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী ও তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট আটজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও সবার দৃষ্টিই এখন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর দিকে। তবে টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। টেবিল ঘড়ি প্রতীকের এ স্বতন্ত্র প্রার্থী নগরীর উন্নয়নে তার ছেলের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, মাদকমুক্ত সমাজ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি পরিকল্পিত নগর উপহার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে শেষ বেলায় তিনি ভোটারদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন। বলছেন, ভোটার কেন্দ্রে না যেতে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নির্বাচনে এ দুই প্রার্থীর লড়াইয়ের সুযোগ নিয়ে বিজয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতার ছেলে শাহনূর ইসলাম রনি। এ ছাড়াও এ নির্বাচনে ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর আসনে ৭৮ জন এবং ৫৭টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদের ২৪৩ জনসহ মোট ৩২৯ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ভোটের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন : নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ফরিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা প্রস্তুত। ইতোমধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। রিটার্নিং অফিস সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার সদস্য নির্বাচনি কাজে নিয়োজিত থাকবে। নির্বাচনে একজন মেয়র, ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৫৭ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৯ জন নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হবে। অবশ্য এদের মধ্যে একজন সাধারণ কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনি এলাকার ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রে তিন হাজার ৪৯৭টি ভোটকক্ষ থাকবে। সিটি কর্পোরেশনের ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
এদের মধ্যে পুরুষ পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৭ জন, নারী ভোটার পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৮ এবং ১৮ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে। নির্বাচনে ১০ হাজার ৯৭১ জন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে ৪৮০ জন প্রিসাইডিং অফিসার, তিন হাজার ৪৯৭ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ছয় হাজার ৯৯৪ জন পোলিং অফিসার। সিটি এলাকার ৩৩৩টি প্রতিষ্ঠানে ৪৮০টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৪টি প্রতিষ্ঠানে দুটি করে ভোটকেন্দ্র, ১৬টি প্রতিষ্ঠানে তিনটি করে ভোটকেন্দ্র, ৯টি প্রতিষ্ঠানে চারটি করে ভোটকেন্দ্র এবং একটি প্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র থাকছে।
২১ প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ৩০টিম, স্ট্রাইকিং ১৯টি ও ৫৭ মোবাইল টিম মাঠে : সিটির ৫৭টি ওয়ার্ডে ৭৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। সঙ্গে থাকবে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও। সেখানে র্যাবের ৩০টি টিম এবং ২১ প্লাটুন বিজিবি টহল দেবে। এ ছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স পুলিশের ১৯টি ও মোবাইল টিম হিসেবে ৫৭টি টিম থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ ও সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জনের ফোর্স থাকবে। অর্থাৎ প্রচুর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। যাতে কোনোরকম বিশৃঙ্খলা না হয়। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রধারী একজন এসআই বা এএসআই ও তিনজন কনস্টেবল, একজন অস্ত্রধারী অঙ্গীভূত আনসার পিসি, একজন এপিসি (অস্ত্রধারী) এবং ১০ জন আনসার বা ভিডিপি সদস্যসহ মোট ১৬ জন দায়িত্ব পালন করবেন। আর গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে এদের সঙ্গে আরও একজন কনস্টেবলসহ মোট ১৭ জন দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে গঠিত মোবাইল ফোর্স সিটির প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি, প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডে স্ট্রাইকিং ফোর্স একটি এবং মহানগরের আটটি থানায় একটি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। এ ছাড়া প্রতি দুটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে টিমসহ র্যাবের মোট ৩০টি টিম, পাঁচটি সাধারণ ওয়ার্ডে এক প্লাটুন হিসেবে বিজিবির ১৩ প্লাটুন সদস্য এবং প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডে একজন করে মোট ১৯ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্তরা আসতে শুরু করেছেন গাজীপুরে। ১৯ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভোট গ্রহণের আগের দুদিন (মঙ্গলবার থেকে), ভোট গ্রহণের দিন এবং ভোটগ্রহণের পরের দুদিন (২৭ মে) পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।
ভোট গ্রহণ হবে ইভিএমে : আজ ২৫ মে অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের এবারের নির্বাচন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস সূত্র আরও জানায়, এবারই প্রথম গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সব কেন্দ্রের ভোট হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। গতকাল বুধবার থেকে মহানগরীর পাঁচটি ভেন্যু থেকে ইভিএম মেশিনসহ নির্বাচনি সরঞ্জাম ৪৮০টি কেন্দ্রে সরবরাহ করা হয়।
যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা : গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে যানবাহন চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পুলিশ। তবে প্রতিবন্ধী ভোটারদের সহযোগিতায় নিয়োজিত গাড়ির ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল থাকবে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভোটের মাঠে যারা : নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদের প্রার্থীরা হলেন— মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ। এ ছাড়া স্বতন্ত্র থেকে মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘আমাদের কাছে ৪৮০টি কেন্দ্রের সবগুলোই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৩৫১টি কেন্দ্র। আর ১২৯টিকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘শিল্প এলাকা বিধায় গাজীপুর সিটিতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বসবাস করে। তাই মানুষের মধ্যে অপরাধপ্রবণতাও বেশি। তবে নির্বাচনি পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত ভালো।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে সে দলের বা যেই হোক না কেন তাকে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনার জন্য বলা হয়েছে। অনিয়মের মাত্রার ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কী নেয়া হবে, তা নির্ভর করবে। ব্যক্তির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, অনিয়মের মাত্রার ওপর শাস্তি নির্ভর করবে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের দিন ভোটার ও এজেন্টদের নিরাপত্তা চেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী, সদ্য সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। ৭০ বছর বয়সি জায়েদা খাতুনের নির্বাচনি প্রচার দেখভাল করছেন তার ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর। জায়েদা খাতুন বলেন, বাংলাদেশ সরকারের কাছে নিরাপত্তা ও সহযোগিতা চাই। আমার টেবিল ঘড়ি মার্কায় ভোট চাই, ভোটের নিরাপত্তা চাই। মায়ের সঙ্গে থেকে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমার মা বলেছেন, ‘আমার সন্তান এবং আমার জন্মভূমি গাজীপুরের ওপর বিগত ১৮ মাস যাবত অত্যাচার করা হয়েছে এবং এর প্রতিবাদে আমার মা নির্বাচন করার প্রস্তুতি নেন। টেবিল ঘড়ির মার্কার সমর্থক ও ভোটারদের ভয়ভীতি ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
জাহাঙ্গীর বলেন, ‘৫৭ ওয়ার্ডের ৪৮৫ কেন্দ্রে, সব জায়গায় যারা টেবিল ঘড়ি মার্কায় নির্বাচন করছেন, প্রচার করছেন এবং এজেন্ট থাকবেন, প্রত্যেকের বাসাবাড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের নির্বাচন না করার জন্য এবং টেবিল ঘড়িকে সাপোর্ট না দেয়ার জন্য বলে দিচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে, তারা সুষ্ঠু ও সুন্দর ভোটটা করার জন্য সহযোগিতা করবে। কিন্তু সেটি না করে, আমাদের যারা সাপোর্ট করে, মাকে সাপোর্ট করে তাদেরকে রাতে-দিনে প্রশাসনের লোকেরা গিয়ে বিভিন্নভাবে ভয় দেখাচ্ছে।’
এদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আসন্ন নির্বাচন ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক’ হবে এবং তাতে ভোটার উপস্থিতিও ‘আশানুরূপ’ থাকবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খান। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন অবশ্যই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে এবং আপনারা লক্ষ করছেন, নির্বাচনে মানুষ তাদের মনের মতো প্রার্থীকে বেছে নেয়ার জন্য তারা উৎসুক হয়ে আছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ’ হওয়ার বিষয়টি প্রমাণের জন্য এই নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়ার কথা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন আজমত উল্লা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনই একটি চ্যালেঞ্জ। আমরা যে নির্বাচনটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি যে, নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে এবং বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, এই জিনিসটি প্রমাণিত হবে আগামীকাল নির্বাচনে। এটিই হচ্ছে চ্যালেঞ্জ।’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেছেন ‘এই সিটি নির্বাচনের মাধ্যমে দেখিয়ে দিতে চাই, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। আগেও হয়েছে এখনো হবে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই মিলে সুষ্ঠু, সুন্দর একটি নির্বাচন করতে চাই। কেন্দ্রের আশপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোবাইল ডিউটি, স্ট্রাইকিং ফোর্স, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। এটি একটি সমন্বিত প্রয়াস। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করব। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মাধ্যমে যেন গাজীপুরের সিটির জনগণকে সুষ্ঠু ও সুন্দর ভোট উপহার দিতে পারি সেটি নিশ্চিত করব।’