জুন ১৯, ২০২৩, ১১:১৮ পিএম
নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি
—অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম
সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে তৎপর
—মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন
প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে
—আব্দুর রহমান
বিগত দুটি জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনেকটাই ‘চ্যালেঞ্জিং’ হবে, এটি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই নেতাকর্মীদের কাছে উল্লেখ করেছেন। আর এই চ্যালেঞ্জকে মাথায় রেখেই সম্ভাব্য নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন তিনি। দলের সভাপতির নির্দেশনার আলোকে ক্ষমতাসীন দলটি ইতোমধ্যে নির্বাচনি কার্যক্রম শুরু করেছে। দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা ইতোমধ্যে তৎপরতা শুরু করেছেন। তফসিল ঘোষণার পর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করার কথা থাকলেও অনানুষ্ঠানিক কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু করেছে দলটি। নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে দফায় দফায় বৈঠকও করছে কেন্দ্রীয় কমিটি। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে গণভবনে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এ ছাড়াও একাধিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে দলটি। সর্বশেষ গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অবশ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল সিলেট ও রাজশাহী সিটি নির্বাচন। তবে জাতীয় নির্বাচনকে মাথায় রেখেই এ নির্বাচনে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার পরামর্শ আসে বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আওয়ামী লীগ জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার লক্ষ্যে প্রচার-প্রচারণা ও কার্যক্রম শুরু করেছে কিনা জানতে চাওয়া হয় দলটির সভাপতিমণ্ডলীর অন্তত তিন সদস্যের কাছে। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। নির্বাচনি কার্যক্রম শুরুও করেছে। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা এ বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তারা জানান, এখন সব কার্যক্রম হবে অনানুষ্ঠানিক, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করবে আওয়ামী লীগ। গত ৫ জুন শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বসেন। তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাদের কথা শোনেন। এরপর তিনি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। ওই সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিছু কুলাঙ্গার আছে যারা বিভিন্ন স্থানে দেশের বিরুদ্ধে বদনাম করে বেড়ায়, মথ্যা বলে। বিদেশি অনুদান পেতে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা দেয়। এরাই নানামুখী ষড়যন্ত্র করে। আর এসব কারণেই আগামী নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেই প্রস্তুতি নিতে হবে।’ আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সংগঠনটি যথেষ্ট শক্তিশালী। সংগঠনটি যেন আরও মজবুত থাকে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।’ আমার সংবাদের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। নির্বাচনি কার্যক্রম শুরু করেছে। বলা যায়, সময় সময়ই প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য দলের পক্ষ থেকে করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সঙ্গে কথা হয় আমার সংবাদের এ প্রতিবেদকের। তিনি জানান, প্রস্তুতি ভালো, নির্বাচনি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নির্বাচনি কার্যক্রম আরও জোরালোভাবে শুরু হবে ঈদের পর। যারা যারা প্রার্থী হবেন তারা মাঠে তৎপর রয়েছেন। তা ছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সম্পাদকমণ্ডলী ও বিভাগীয় সংগঠনে জড়িতরা কাজ করছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতাকর্মী নির্বাচনি কার্যক্রমে রয়েছেন। জেলা কমিটি থেকে শুরু করে সবাই নির্বাচনি কার্যক্রম চালাচ্ছেন।’ দলটির সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আব্দুর রহমান আমার সংবাদকে জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারা প্রার্থী হবেন তা নির্ধারণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এখন চলছে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ। এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন পরিচালনা করছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পর জাতীয় নির্বাচনের নানা কার্যক্রম শুরু হবে। আর তফসিল ঘোষণার পর আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম চালাবে তার দল। এদিকে গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় সিলেট ও রাজশাহী সিটি নির্বাচনে করণীয় ঠিক করা হয়েছে বলে আমার সংবাদকে জানান দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন।