Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪,

কাপ্তাই জলবিদ্যুৎকেন্দ্র

কর্ণফুলীতে উৎপাদন বেড়েছে

মহিউদ্দিন রাব্বানি

জুন ২৭, ২০২৩, ০১:০৯ এএম


কর্ণফুলীতে উৎপাদন বেড়েছে
  • বর্তমানে ৬০ মেগাওয়াট উৎপাদন হচ্ছে
  • সর্বোচ্চ উৎপাদন সক্ষমতা ২৪০ মেগাওয়াট
  • সবচেয়ে কম খরচে উৎপাদন জলবিদণজ্ঝমু

সমপ্রতি বৃষ্টি শুরু হওয়ায় এবং উজান থেকে পানি নামায় বিদ্যুৎ উৎপাদন

বৃদ্ধি পেয়েছে

—এটিএম আবদুজ্জাহের, ব্যবস্থাপক

রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানির ওপর নির্ভর করে দেশের একমাত্র কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান কর্তৃপক্ষ। শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে গেলে উৎপাদন ব্যাহত হয় কেন্দ্রটির। তবে কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন বেড়েছে। আগে বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি মাত্র ইউনিট চালু থাকলেও বর্তমানে দুটি ইউনিটে উৎপাদন হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেন বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আবদুজ্জাহের।

কাপ্তাই জলবিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানায়, শুষ্ক মৌসুমে জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের একটিমাত্র ইউনিট দিয়ে ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছিল। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে পার্বত্য এলাকায় বৃষ্টিপাত হওয়ায় উৎপাদনের পরিমাণ কিছুটা বাড়িয়ে ৩০-৩৫ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়েছে। বর্তমানে দুটি ইউনিট চালুর মাধ্যমে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত নিয়মিত হলে ধীরে ধীরে বাকি ইউনিটগুলো চালুর মাধ্যমে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে গেলে উৎপাদন ব্যাহত হয় কেন্দ্রটির। হ্রদে পানির পরিমাণ বেশি থাকলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে উৎপাদনও বেড়ে যায়। বর্তমানে রেশনিং পদ্ধতিতে দুটি করে ইউনিট পরিচালনা করা হচ্ছে। যার মধ্যে প্রতি সেকেন্ডে ১১ হাজার ৪১৫ কিউসেক ছাড়া হচ্ছে। গত শনিবার রুলকার্ভ অনুযায়ী পানি রয়েছে ৭৫.৩২ (মিনস সি লেভেল) আর পানি থাকার কথা ৮১.৮৪ (মিনস সি লেভেল)।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বিষয়ে জানতে চাইলে কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এ টি এম আবদুজ্জাহের বলেন, কাপ্তাই হ্রদের পানি ওপর নির্ভরশীল এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গত এক মাস  আগেও পানি সংকটে উৎপাদন সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে এসেছিল। সমপ্রতি বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ও উজান থেকে পানি নামায় কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে একটি ইউনিট দিয়ে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন হলেও বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে ৬০-৬৫ মেগাওয়াট। ধীরে ধীরে কাপ্তাই হ্রদে বাড়বে পানি। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনও বাড়বে। দেশের সবচেয়ে কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা কাপ্তাই জলবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটি পাঁচটি ইউনিটের মাধ্যমে ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। প্রসঙ্গত, ষাটের দশকে জলবিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে খরস্রোতা কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দেয়ার কারণে গড়ে ওঠে বিস্তীর্ণ কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদ। পরবর্তী সময়ে ১৯৬২ সালে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দেয়া অংশে চালু করা হয়েছে দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎকেন্দ্র কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎকেন্দ্র। শুরুর দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ৮০ মেগাওয়াট। পরবর্তী সময়ে দুই ধাপে স্থাপনাটির বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করে মোট ২৪০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়েছে। 

এ উৎপাদনের পুরোটাই যোগ হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। কাপ্তাই বাঁধের মধ্যে ১২ দশমিক ২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১১ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থের ১৬টি জলকপাট বা স্লুইস গেট রয়েছে। এ ১৬টি জলকপাট দিয়ে একত্রে প্রতি সেকেন্ডে পাঁচ লাখ ২৫ হাজার কিউসেক পানি নির্গমন করতে পারে।

Link copied!