Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

ওপেনিংয়ে তানজিদে সমাধান!

আহমেদ হৃদয়

আহমেদ হৃদয়

আগস্ট ১৩, ২০২৩, ১২:১৩ এএম


ওপেনিংয়ে তানজিদে সমাধান!
  • এশিয়া কাপের জন্য বাংলাদেশ দল ঘোষণা

তামিম ইকবাল দলে থাকবেন না এটা আগে থেকেই নিশ্চিত। মাঝে আবার অবসরের ঘোষণা দিয়ে বসেন তামিম। পরদিনই প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে অবসর তুলে নেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তবে অবসর তুলে নিলেও আসন্ন এশিয়া কাপে থাকছেন না দেশসেরা এই ওপেনার। তখন থেকেই একজন বিকল্প ওপেনারের খোঁজে বিসিবি।

দরজায় কড়া নাড়ছে এশিয়া কাপের ১৬তম আসর। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে এশিয়ার সেরা হওয়ার লড়াই। মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তান ও নেপালের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে এশিয়া কাপের এবারের আসর। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপকে সামনে রেখে গতকাল শনিবার ১৭ জনের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। সেই ১৭ জনের দলে যোগ হয়েছে আরও তিনজন ক্রিকেটার। গতকাল ঘোষিত ১৭ জনের ওয়ানডে দলে সবচেয়ে বড় চমক তানজিদের দলে থাকা। অবশ্য তাকে নেয়া হতে পারে এই আলাপ কদিন ধরেই চাওড় ছিল ক্রিকেটপাড়ায়।

ইমার্জিং এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের বিপক্ষে ৩৯ বলে ৫১, ওমানের বিপক্ষে ৪৯ বলে ৬৮ আর ভারতের বিপক্ষে ৫৬ বলে ৫১ রানের মাঝারি তিন ইনিংস খেলেন তানজিদ। ওপেন করতে নেমে তার ব্যাটিংয়ে আগ্রাসী মেজাজ নজর কাড়ে নির্বাচকদের। তামিম ইকবাল না থাকায় লিটন দাসের ওপেনিং সঙ্গী নিয়ে বেশ কদিন ধরেই চিন্তা ছিল টিম ম্যানেজমেন্টের। এই জায়গায় নাঈম শেখকে চেষ্টা করা হলেও তিনি সেভাবে এখনো নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। সেই জায়গায় তানজিম দিচ্ছেন সমাধানের আভাস। আলোচনা হচ্ছে নতুন সুযোগ পাওয়া আরেক বাঁ-হাতি ওপেনার তামিমকে নিয়ে। ২২ বছর বয়সি এই ক্রিকেটারের নাম তানজিদ হাসান তামিম। ইমার্জিং এশিয়া কাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করার কারণে এবার মূল এশিয়া কাপের দলে সুযোগ পেলেন তিনি।

তরুণ এই ওপেনারকে দলে নেয়া হয়েছে এশিয়া কাপে লিটন কুমার দাসের সঙ্গে যেন ইনিংস ওপেন করতে পারেন। এমনিতেই দলে আরেক ওপেনার রয়েছেন- মোহাম্মদ নাঈম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার বেশ কিছু অভিজ্ঞতা আছে তার। যদিও ধারাবাহিক নন তিনি। এ কারণেই মূলত তানজিদ হাসান তামিমের দলে অন্তর্ভুক্তি। তার মধ্যে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। 

তানজিদ তামিমকে দলে নেয়ার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, তানজিদ তামিমকে নিয়ে আমরা নির্বাচকরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। কারণ ওকে এইচপিতে অনেক নার্সিং করা হয়েছে। শেষ ইমার্জিং কাপেও কিন্তু যথেষ্ট পারফর্ম করেছে। আমরা আশাবাদী ইনশাআল্লাহ দেশের জন্য ভালো কিছু দিতে অপেক্ষা করছে। ওপেনিংয়ে তানজিদ তামিমই হয়তো লিটনের সঙ্গী হয়ে যেতে পারেন। তবে নাঈম শেখকে দলে নেয়া হয়েছে তার অভিজ্ঞতার কারণে। 

প্রধান নির্বাচক বলেন, নাঈম শেখ ঘরোয়া ক্রিকেটে যথেষ্ট ভালো খেলেছে। ইমার্জিং কাপে খুব একটা ভালো করতে পারেনি কিন্তু স্টেবল। এর সঙ্গে যেহেতু আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা আছে। এজন্য আমরা চিন্তা করেছি ওকে আরেকটু সুযোগ দেয়া যায়। শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে কেন নেয়া হলো ১৭ সদস্যের দলে? তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক। তিনি বলেন, শামীম আমাদের এইচপিতে ছিল আন্ডার নাইন্টিন থেকে আসার পর। আমাদের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডের ক্রিকেটার। মাঝখানে ২০২১ বিশ্বকাপের পর পারফরম্যান্স একটু ডিক্লাইন ছিল। তারপর ওভারকাম করেছে। যতগুলো সিরিজ গেছে, শেষ টি-টোয়েন্টিতেও যথেষ্ট ভালো খেলেছে। ওর অবশ্যই ক্যাপাবেলিটি আছে ভালো ক্রিকেট খেলার। ওই আত্মবিশ্বাসেই আমরা ওকে নিয়ে আগাচ্ছি। শেখ মেহেদী হাসান অফ স্পিন করলেও ব্যাট হাতে বেশ বিধ্বংসী। কিন্তু মাঝে যেন হারিয়ে যাচ্ছিলেন। অবশেষে আবারও দলে ফিরলেন। 

তাকে ফেরানোর কারণ ব্যাখ্যা করে প্রধান নির্বাচক বলেন, শেখ মেহেদী মাঝখানে বিপিএলে ইনজুরিতে পড়েছিল। অনেকদিন ভুগেছে। তারপরও যেহেতু আমাদের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে ছিল। ইমার্জিং কাপেও যথেষ্ট ভালো করেছে। আশা করছি নিজেকে মেলে ধরতে পারবে এশিয়া কাপে সুযোগ পেলে।

এশিয়া কাপের জন্য ১৭ জনের সঙ্গে আরও তিন ক্রিকেটারকে রাখা হয়েছে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে। তারা হলেন— তাইজুল ইসলাম, সাইফ হাসান এবং তানজিন হাসান সাকিব। মূল স্কোয়াডের সঙ্গেই নিজেদের প্রস্তুত রাখবেন তারা। এশিয়া কাপের পরপরই বিশ্বকাপ, সেই ভাবনায়ই ২০ সদস্যের এই ইউনিট। গতকাল সকালে সংবাদ সম্মেলন করে এশিয়া কাপের দল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তার দুই সহযোগী হাবিবুল বাশার সুমন ও আব্দুর রাজ্জাক। স্কোয়াড ঘোষণার কিছুক্ষণ পর বিসিবি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় আরও তিন ক্রিকেটারকে অপেক্ষমান তালিকায় রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাইফ টপঅর্ডার ব্যাটার, সাকিব ব্যাটার। অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল সবশেষ ওয়ানডে সিরিজে মূল দলেই ছিলেন। এশিয়া কাপের গ্রুপপর্বে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ৩১ আগস্ট। পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, পরেরটি ৩ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে লাহোরে।

টপঅর্ডারে রাখা লিটনের সঙ্গে রাখা হয়েছে তানজিদ হাসান তামিম, নাঈম শেখ ও নাজমুল হোসেন শান্তকে। মিডল অর্ডারে মুশফিকের সঙ্গে রাখা হয়েছে তাওহীদ হূদয়, শামীম হোসেন পাটওয়ারী, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ ও শেখ মেহেদীকে। সাকিবের স্পিন অ্যাটাকে থাকবেন নাসুম আহমেদ। স্ট্যান্ডবাই হিসেবে আছেন তাইজুল ইসলাম। পেস বোলিংয়ে তাসকিনের সঙ্গে আছেন শরিফুল ইসলাম, ইবাদত হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান এবং হাসান মাহমুদ।

Link copied!