আমার সংবাদ ডেস্ক
জুন ৫, ২০২৪, ১২:২১ এএম
আমার সংবাদ ডেস্ক
জুন ৫, ২০২৪, ১২:২১ এএম
কঠিন সমীকরণে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল। বর্তমান ক্ষমতাসীন বিজেপি এককভাবে সরকার গঠন করতে পারছে না। তাই ছোট দলগুলোর প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে এবার। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গতকাল রাতে ঘোষিত ২৫৪টি আসনের মধ্যে দেখা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতাসীন দল বিজেপি পেয়েছে ১২৬টি আসন। তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল রাহুল গান্ধীর ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস পেয়েছে ৫৪টি আসন। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৮টি আসন পেয়েছে সমাজবাদী দল। আর বাকি আসনগুলো পেয়েছে অন্যান্য দল। ভারতে কোনো দল যদি এককভাবে সরকার গঠন করতে চায়, তাহলে তাদের ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ২৭২টি আসনে জয় পেতে হবে। তবে মোদির বিজেপি এককভাবে এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অপরদিকে ভারতে নতুন সরকার গঠনের চেষ্টা করছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী ইন্ডিয়া ব্লক। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেননি। তারা চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) এবং নীতিশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেডের (জেডিইউ) সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। বর্তমানে এই দুটি দলই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের অংশ। কিন্তু তারা এর আগে কংগ্রেসের মিত্র ছিল। এ নিয়ে বুধবার (আজ) মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
এই দুই দল ছাড়া আরও একাধিক এনডিএ শরিকের ওপর নির্ভর করতে হবে বিজেপিকে। এদের মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্রের শিবসেনার সিন্ধে গোষ্ঠী, যারা এখন পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছে ছয় আসনে, বিহারে লোক জনশক্তি পার্টি এগিয়ে রয়েছে পাঁচ আসনে এবং উত্তর প্রদেশের রাষ্ট্রীয় লোক দল এগিয়ে রয়েছে তিন আসনে। তবে শুধু এসব দলই নয়, আরও বেশ কিছু দল রয়েছে, যাদের কেউ দুই বা এক আসনে সারা ভারতে এগিয়ে রয়েছে। এদেরও সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে ভবিষ্যতের বিজেপিকে। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে অনেক কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নতুন ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে বিজেপিকে। এ ধরনের সমস্যায় তারা গত দুবার পড়েনি। এর ফলে ভারতের রাজনীতির একটা নতুন অধ্যায় সূচিত হবে বলেও মনে করছে পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
সব নজর এখন ছোট দলের প্রতি: ভারতে এবারের লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না, গতকাল এটা যতই স্পষ্ট হয়ে উঠছে ততই রাজনৈতিক মহলের ‘ফোকাস’ সরে আসছে দেশের দুই প্রবীণ রাজনীতিকের ওপর। ঘটনাচক্রে তাদের দুই জনের ঘন ঘন রাজনৈতিক সঙ্গী বদলানোর পুরনো অভ্যাস আছে। এবার তারা ঠিক কী করেন সেদিকেই সারা ভারত প্রবল উৎকণ্ঠা ও আগ্রহের সঙ্গে নজর রাখছে। এরা হলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার ও অন্র্লের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু। তাদের দুই জনের দল যথাক্রমে জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) ও তেলুগু দেশম পার্টির (টিডিপি) সমর্থন ছাড়া বিজেপির পক্ষে যে কেন্দ্রে সরকার গড়া সম্ভব নয়, সেটা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠতেই রাতারাতি তাদের রাজনৈতিক গুরুত্ব ভীষণ বেড়ে গেছে। আর তারা সত্যিই শেষ পর্যন্ত বিজেপিকে সমর্থন করেন, নাকি আরও একবার ‘পাল্টি’ খান, সেটা নিয়েও জল্পনা বাড়ছে। এর কারণ নীতিশ কুমার ও চন্দ্রবাবু নাইডু দুজনই ভারতীয় রাজনীতির খুব পুরনো ‘পাল্টুরাম’ হিসেবে পরিচিত। পাল্টি শব্দটা হিন্দিতেও প্রচলিত, যার মানে হল ডিগবাজি খাওয়া। সেই থেকেই এই ‘পাল্টুরাম’ শব্দের উৎপত্তি। আসলে নীতিশ কুমার ও চন্দ্রবাবু নাইডু, দুজনই তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে এতবার বিজেপির সঙ্গ ছেড়েছেন এবং ধরেছেন যে রাজনীতির পর্যবেক্ষকরাও খেই হারিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু ‘পাল্টুরাম’ শব্দটা তাদের নামের সঙ্গে সেঁটে বসে গেছে। যেমন, এবারের লোকসভা নির্বাচনেই জেডিইউ ও টিডিপি দুটি দলই বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের অংশ হিসেবে ভোটে লড়েছে। বিহারে ও অন্র্লে যথাক্রমে জেডিইউ ও টিডিপির সঙ্গে বিজেপির আসন সমঝোতাও হয়েছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, নির্বাচনের ফল বেরোনোর পরও এই দুটি দল বিজেপিকে সমর্থন করতে বাধ্য থাকবে।
ভারতে নির্বাচনের আগে যে সব ‘প্রাক-নির্বাচনি সমঝোতা’ হয়, ভোটের পরও কোনো একটা জোটের সেই দলগুলোকে একসঙ্গে থাকতে হবে, তার কোনো আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই। পরিস্থিতি অনুযায়ী, ধরা যাক এনডিএ জোটের কোনো দল ভোটের ফল বেরোনোর পর প্রতিপক্ষ ইন্ডিয়া জোটে যোগ দিতেই পারে কিংবা উল্টোটাও অনায়াসেই ঘটতে পারে। দেশের রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়ে তাদের সমর্থন কোনো দল বা জোটের দিকে, সেটা জানালেই যথেষ্ট। এখন ভারতে নির্বাচনি ফলের যে ‘ট্রেন্ড’ বা প্রবণতা তাতে দেখা যাচ্ছে বিজেপির পক্ষে এককভাবে গরিষ্ঠতা পাওয়া খুব মুশকিল। সরকার গড়তে হলে তাদের এনডিএর অন্য শরিকদের সমর্থন লাগবেই। গতকাল ভারতীয় সময় বিকাল পাঁচটায় নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট জানাচ্ছে, বিজেপি জিতেছে বা এগিয়ে আছে দেশের মোট ২৪৪টি আসনে। এখন পার্লামেন্টে গরিষ্ঠতার জন্য চাই অন্তত ২৭২টি আসন। কিন্তু সেই ‘ম্যাজিক নম্বরে’র চেয়ে বিজেপি অন্তত ২৮ ধাপ পিছিয়ে।
এবার দেখা যাক জেডিইউ বা টিডিপির আসন সংখ্যা। ঠিক বিকাল পাঁচটায় নীতিশ কুমারের দল বিহারের ১২টি আসনে ও চন্দ্রবাবু নাইডুর দল অন্ধ্রের ১৬টি আসনে জিতেছে বা এগিয়ে আছে। অর্থাৎ এই দুই দলের ঝুলিতেও আসছে ঠিক ২৮টির মতো আসন। ফলে এই দুজনের সমর্থন পেলে তবেই বিজেপির পক্ষে অনায়াসে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গড়া সম্ভব হবে। এরপর চিরাগ পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি (পাঁচটিতে এগিয়ে), একনাথ সিন্ধের শিবসেনা (ছয়টিতে এগিয়ে), জয়ন্ত চৌধুরীর রাষ্ট্রীয় লোকদলের (চারটিতে এগিয়ে) মতো আরও কয়েকটি ছোট শরিক দলের সমর্থন পেয়ে গেলে সেই সরকার নিঃসন্দেহে আরও মজবুত হবে। কিন্তু সরকার গড়ার চাবিকাঠি যে তারপরও চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতিশ কুমারের হাতেই থাকবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। চন্দ্রবাবু নাইডুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বলে, বিজেপিকে ‘ল্যাজে খেলানোর’ ইতিহাস তার খুবই পুরনো। সেই অটলবিহারী বাজপেয়ীর প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় থেকে তিনি এটা করে আসছেন। বাজপেয়ীর বিজেপি সরকারকে সমর্থনের বদলে একের পর এক সুবিধা তিনি আদায় করেছেন, আবার একটা পর্যায়ে বিজেপির সঙ্গ ছাড়তেও দ্বিধা করেননি। ৭৪ বছর বয়সি চন্দ্রবাবু নাইডু নরেন্দ্র মোদির প্রায় সমবয়সি। তিনি হলেন অন্র্লের প্রবাদপ্রতিম চিত্রতারকা ও এককালের মুখ্যমন্ত্রী এন টি রামারাওয়ের (এনটিআর) জামাতা কিন্তু নিজে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য বিখ্যাত শ্বশুরের সঙ্গে ‘রাজনৈতিক বিশ্বাসঘাতকতা’ করতেও দ্বিধা করেননি। একটা সময় চন্দ্রবাবু ছিলেন অবিজেপি, অকংগ্রেস ‘তৃতীয় ফ্রন্টে’র শীর্ষ নেতা, আবার পরে চলে আসেন বিজেপি শিবিরে। মাঝে বহুদিন বিজেপিকে ছেড়ে দিলেও এবার নির্বাচনের ঠিক আগে তিনি তেলুগু চিত্রতারকা পবন কল্যাণকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপির হাত ধরেন। কিন্তু ভোটের পরও চন্দ্রবাবু বিজেপির সঙ্গেই থাকবেন তার কোনো গ্যারান্টি নেই। অন্তত তার ট্র্যাক-রেকর্ড তাই বলে।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী, ৭৩ বছর বয়সি নীতিশ কুমারের সম্পর্কেও প্রায় একই কথা খাটে। সেই ২০০৫ সাল থেকে গত আঠারো বছর ধরে তিনি একটানা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে কখনও তার দল জেডিইউর বিধানসভায় গরিষ্ঠতা ছিল, কখনও আবার ছিল না। তাতে কিন্তু নীতিশ কুমারের মুখ্যমন্ত্রী থাকায় কোনো সমস্যা হয়নি। কখনও বিজেপির হাত ধরে, কখনও কংগ্রেস-আরজেডির মতো দলের হাত ধরে তিনি ঠিকই পরিস্থিতি ‘ম্যানেজ’ করে নিয়েছেন। গত এক দশকেই তিনি দুবার বিজেপির হাত ধরেছেন এবং দুবার আরজেডি-কংগ্রেস জোটের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। চন্দ্রবাবু নাইডুর পর রাজনীতির ‘সেরা পাল্টুরাম’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।
বিজেপির সঙ্গে নীতিশ কুমারের শেষ সমঝোতা হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগেই। কিন্তু নির্বাচনের ফলে বিজেপি নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সেই সমঝোতা ভোটের পরও টিকবে— এমন নিশ্চয়তা নেই।
বারানসীতে জয় পেলেন মোদি
উত্তরপ্রদেশের মন্দিরের শহর বলে পরিচিত বারানসীতে জয়ী হয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিকটতম প্রার্থী কংগ্রেস নেতা অজয় রায়কে দেড় লাখেরও বেশি ভোটের ব্যাবধানে পরাজিত করেছেন তিনি। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাট থেকে উঠে আসা নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালের আগ পর্যন্ত নিজ রাজ্যে নির্বাচনি প্রার্থী হতেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো বারানসীতে প্রার্থী হন তিনি এবং জয়ী হন। পরে ২০১৯ সালের নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জয় পান তিনি। এবার তৃতীয়বারের মতো এই আসনে জিতলেন তিনি।
কেরালায় সাড়ে ৩ লাখ ভোটে জয় পেলেন রাহুল
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে কেরালা ওয়েনাডে আসনে জয় পেয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য, এই আসনে রাহুল পেয়েছেন ছয় লাখ ৪৭ হাজার ৪৪৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (সিপিআই) প্রার্থী অ্যানি রাজা পেয়েছেন দুই লাখ ৮৩ হাজার ২৩ ভোট। দুজনের ভোটের ব্যবধান তিন লাখ ৬৪ হাজার ৪২২। রাহুল উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলি থেকেও নির্বাচন করেছেন। এই আসনের চূড়ান্ত ফল এখনো ঘোষণা করা হয়নি। তবে তিনি রায়বেরেলি থেকেও জিততে যাচ্ছেন এটা নিশ্চিত।
পশ্চিমবঙ্গে ৩১ আসনে মমতার আধিপত্য
সব হিসাব-নিকাশ উল্টে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে এগিয়ে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। গতকাল মঙ্গলবার ভোট গণনার শুরুতেই এগিয়ে ছিল মোদির বিজেপি। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই এগিয়ে গেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ৩১টি আসনে। আর বিজেপি এগিয়ে ১০টি আসনে এবং কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে একটি আসনে। ভারতের লোকসভার মোট আসন ৫৪৩টি। বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির তথ্যমতে, ২৯০ আসনে এগিয়ে রয়েছে মোদির জোট-এনডিএ। আর রাহুল গান্ধীর ইন্ডিয়া জোট এগিয়ে ২২৮ আসনে। সরকার গঠন করতে হলে কোনো জোট বা দলকে কমপক্ষে ২৭২টি আসন পেতে হবে। ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, কোনো দল বা জোট যদি সরকার গঠন করতে চায় তাহলে তাদের লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে কমপক্ষে ২৭২টিতে জয় পেতে হবে। ভারতের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল বিজেপি ও কংগ্রেস নির্বাচনে অংশ নিয়েছে জোট গঠন করে। ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জোট এনডিএ বা ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এলায়েন্স শুরু থেকেই ৪০০-র বেশি আসন পাওয়ার প্রত্যাশা করছে। অপরদিকে, কংগ্রেসের ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (ইন্ডিয়া) এবার বিজেপির জয়রথ থামানোর ব্যাপারে আশাবাদী।
কাশ্মীরে হেরে গেলেন সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী
জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বারামুল্লা লোকসভা আসন থেকে তার পরাজয় মেনে নিয়েছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং সাবেক বিধায়ক ইঞ্জিনিয়ার আবদুল রশিদকে, যিনি বর্তমানে ইউএপিএ মামলায় তিহার জেলে বন্দি।
জম্মু ও কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহ-সভাপতি এক লাখ ২৯ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিলেন। এক্সিট পোল আবদুল্লার জয়ের পূর্বাভাস দিয়েছিল। তবে গতকাল মঙ্গলবার বারামুল্লা ডিগ্রি কলেজে গণনা শুরু হওয়ার পর থেকে রশিদ শুরু থেকেই তার ব্যবধান বজায় রেখেছেন, যা প্রতিটি রাউন্ডের গণনার সাথে সংহত হচ্ছে। ‘আমি মনে করি অনিবার্যকে মেনে নেয়ার সময় এসেছে। উত্তর কাশ্মীরে জয়ের জন্য ইঞ্জিনিয়ার রশিদকে অভিনন্দন। আমি বিশ্বাস করি না যে তার জয় তাকে কারাগার থেকে মুক্তি ত্বরান্বিত করবে বা উত্তর কাশ্মীরের জনগণ তাদের অধিকার অনুযায়ী প্রতিনিধিত্ব পাবে না, তবে ভোটাররা কথা বলেছেন এবং গণতন্ত্রে এটাই গুরুত্বপূর্ণ,’ বলেন ওমর আবদুল্লাহ। জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখের ছয়টি আসনের মধ্যে ন্যাশনাল কনফারেন্স দুটি আসনে, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দুটি আসনে এবং স্বতন্ত্ররা দুটি আসনে এগিয়ে রয়েছে। রশিদ তিহার জেল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তার হয়ে প্রচার চালিয়েছেন তার ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার রশিদ। রশিদ দুই লাখ ৯১ হাজার ৬১০ ভোট পেয়ে আবদুল্লাহ থেকে এক লাখ ৩৪ হাজার ৭০৫ ভোটে এগিয়ে ছিলেন। আব্দুল্লাহ পেয়েছেন এক লাখ ৫৬ হাজার ৯০৫ ভোট। ৯৮ হাজার ৬০৩ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন পিপলস কনফারেন্সের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ লোন।
এদিকে, পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সভাপতি ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি অনন্তনাগ-রাজৌরি লোকসভা কেন্দ্রে ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রার্থী মিয়া আলতাফের চেয়ে দুই লাখ ২২ হাজার ৮৩১ ভোটে পিছিয়ে রয়েছেন। অনন্তনাগ-রাজৌরি লোকসভা আসন থেকে নিজের পরাজয় স্বীকার করে নেয়া মেহবুবা মুফতি সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, ‘জনগণের রায়কে সম্মান জানিয়ে আমি আমার পিডিপি কর্মী ও নেতাদের সমস্ত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তাদের কঠোর পরিশ্রম ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানাই। যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন তাদের প্রতি আমার গভীর কৃতজ্ঞতা। জয়-পরাজয় খেলারই অংশ এবং এটি আমাদের পথ থেকে বিরত রাখতে পারবে না। জয়ের জন্য মিয়া সাহেবকে অভিনন্দন।’
শ্রীনগর লোকসভা আসনে ন্যাশনাল কনফারেন্সের আগা সৈয়দ রুহুল্লাহ মেহেদি তার প্রতিদ্বন্দ্বী পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের ওয়াহিদ পাড়ার বিরুদ্ধে এগিয়ে রয়েছেন। এছাড়া বিজেপির বর্তমান সাংসদ যুগল কিশোর শর্মা এবং জিতেন্দ্র সিং যথাক্রমে জম্মু ও উধমপুর থেকে এগিয়ে রয়েছেন। লাদাখে স্বতন্ত্র প্রার্থী হানিফা জান কংগ্রেস প্রার্থীর চেয়ে ২৭ হাজার ৯৯৭ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। ২০১৯ সালে এই আসনে জেতা বিজেপি রয়েছে তৃতীয় স্থানে। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস