ইয়ামিনুল হাসান আলিফ
জুলাই ৩১, ২০২৪, ০৩:১১ পিএম
ইয়ামিনুল হাসান আলিফ
জুলাই ৩১, ২০২৪, ০৩:১১ পিএম
তৃতীয় পক্ষ এখানে সুযোগ নেয়ায় পরিবেশ এতটা খারাপ হয়েছে
—অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক সরকার
সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি
দীর্ঘ বিরতি শিক্ষার্থীদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটায়—মুহাম্মদ নুরুল আমিন
অধ্যক্ষ, চরফ্যাশন কারামাতিয়া ,কামিল (এমএ) মাদ্রাসা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা কোনোভাবেই কাম্য নয়
—ফায়েকুজ্জামান মিয়া
সাধারণ সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি
বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা জীবনসংকটে
—ফাতেমা রহমান
পিএইডি ফেলো, ইউনিভার্সিটি অব মালায়া, মালয়েশিয়া
‘বর্তমান পরিবেশ নিয়ে ভয়-শঙ্কা আছে। কবে ক্লাস শুরু হবে, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে জানা নেই। তবে সময় ভালোই কাটছে। বাইরে যেতে পারছি না, এ জন্য খারাপ লাগছে।’
আমার সংবাদকে এমনটাই বলছিলেন ঢাকা কমার্স কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইশতিয়াক তাফিম। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বন্ধ আছে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই বন্ধ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চরফ্যাশন কারামাতিয়া কামিল (এমএ) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ নুরুল আমিন আমার সংবাদকে বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে। অবশ্য দীর্ঘ বিরতি শিক্ষার্থীদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটায়। আশা করি সরকার সবকিছু বিবেচনা করে দ্রুতই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত। স্থগিত হয়েছে চলমান এইচএসসি পরীক্ষাও। কোটা সংস্কার আন্দোলনের উত্তাপ ছড়ায় স্কুল-কলেজেও। শেষ পর্যন্ত গত ১৬ জুলাই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়। একই দিন প্রথম দফার মতো এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এরপর দুই দফায় স্থগিত করা হয় এইচএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। নিজের দুশ্চিন্তা নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী রিমেল ইসলাম আমার সংবাদকে বলেন, ‘ছাত্রজীবনে ছুটি তো ভালোই লাগে। পরীক্ষার মাঝে ছুটি দিলে মনে হয় বেশি পড়তে পারব। আসলে তা তো হয়ইনি, উলটো পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। যে গতি আর রুটিনমাফিক পড়া ছিল, সেটি আর নেই। দেশের এ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা কবে হবে— তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’ তবে যে কোনো বড় ক্ষতি এড়াতে ছোট সমস্যাগুলো মেনে নিতে হয় বলে মনে করছেন শিক্ষকরা।
এদিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত বন্ধ দীর্ঘদিন ধরেই। পেনশন-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি দিয়ে আন্দোলন করছেন। অন্যদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জুলাইয়ের প্রথম দিন থেকেই উত্তাল ছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এক সময় আন্দোলনে যুক্ত হয় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। কোটা সংস্কারের পর আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করলেও অন্য অংশ পালটা বিজ্ঞপ্তিতে তা প্রত্যাখ্যান করে এখনো চলমান রাখা হয়েছে আন্দোলন। আর এতে বাড়ছে সংকট। যেন দোটানার পরিবর্তে শতটানায় পড়েছে দেশের শিক্ষাঙ্গন। আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামতেও এসেছে ভিন্নতা। তবে সবারই চাওয়া দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার বিষয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শর্মিষ্ঠা সরকার আমার সংবাদকে বলেন, ‘আমরা কোটা সংস্কার চেয়েছিলাম, সরকার সেটা আমাদের দিয়ে দিয়েছে। নতুন করে আন্দোলনের কারণে ক্যাম্পাসে পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, অসুস্থ রাজনীতির সৃষ্টি হচ্ছে এবং দীর্ঘ এক মাস ধরে ক্যাম্পাস কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদের সেশনজট তৈরি হচ্ছে। ছাত্র হতাহতের ঘটনা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্টের বিষয়ে তদন্ত করে সঠিক বিচারব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে। বিচারব্যবস্থা নিজেদের হাতে তুলে না নিয়ে প্রশাসনের ওপর আস্থা রেখে সরকারের হাতে হস্তান্তর করাই এখন সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলে আমি মনে করি।’
শিক্ষার্থীসহ সবাইকে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ আমার সংবাদকে বলেন, ‘আমরা যারা ৭১ সালের মানুষ, আমরা ৯ মাস ক্লাস করিনি। সারা দেশে অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে। এগুলো তো সব সময় হয় না। এগুলো বিশেষ সময়। বিষয়গুলো শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের বুঝতে হবে। এমন একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে, হয়তো আরও কিছুদিন থাকবে। সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।’
সরকারি সাঁড়া মাড়োয়ারী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক আব্দুল হাকিম খান টিটন আমার সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের সরকারি সিদ্ধান্ত মেনেই চলতে হবে। কিছু সময় বড় ক্ষতিগুলো থেকে রক্ষা পেতে ছোট সমস্যাগুলো মেনে নিতেই হয়। এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনে এক ধরনের অনিশ্চয়তা-শঙ্কা কাজ করলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত ছিল সময়োপযোগী। দেশের বিভিন্ন স্থানের ঝামেলাপূর্ণ পরিবেশে শিক্ষার্থীদের বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্তে তারা বড় ধরনের সমস্যা থেকে বাইরে ছিল।’
আন্দোলনে হতাহতের ঘটনা ও গ্রেপ্তার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খোলার প্রত্যাশা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের। ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান শোভা আমার সংবাদকে বলেন, ‘আন্দোলন, ক্যাম্পাস বন্ধ ও সেশনজটের কারণে শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এসব কারণে শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপের মধ্যে আছে। যার ফলে তাদের একাডেমিক ও পেশাগত ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। সহপাঠীদের হারিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করা অনেকের জন্যই কঠিন হয়ে পড়ছে। এখনো বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এসবের জন্য একটি ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখন ছেলেরা নিজেদের শিক্ষার্থী দাবি করতেও ভয় পাচ্ছে, শিক্ষা গ্রহণ করবে কীভাবে?’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ কাম্য নয় বলে মনে করছেন শিক্ষকরাও। গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফায়েকুজ্জামান মিয়া বলেন, জ্ঞান উৎপাদন ও মেধা বিকাশের আতুরঘর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা কোনোভাবেই কাম্য নয়। যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনাটা এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি জরুরি। যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে আস্থার জায়গা ফিরিয়ে এনে সমস্যা নিরসনকল্পে অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে শিক্ষার অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে উদ্ভূত পরিস্থিতি দূর হবে— এটা আমার বিশ্বাস।’
দীর্ঘ বন্ধে সেশনজটের আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হুমায়রা বিনতে আজাদ আমার সংবাদকে বলেন, কোটা আন্দোলন যেমন স্বাভাবিকভাবে শুরু হয়েছিল, দ্রুতই তা ঘোলাটে হলো। শিক্ষকদের কর্মবিরতি কর্মসূচিও চলমান ছিল। এ পর্যায়ে এসে আমাদের শিক্ষার্থীদের বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ছয় মাসের একটা সেমিস্টারে এখন দীর্ঘ দেড় মাসের বিরতিতে কোন পর্যায়ে এসে দাঁড়াবে? তাছাড়া যত মৃত্যু ঘটল, তাতেও মানসিক অবস্থা টালমাটাল। সেশনজট নিয়ে যেন ভুগতে না হয়, সে বিষয়ে এখন শিক্ষকরা দ্রুত সমাধান দিক। শিক্ষাজীবনে আলো ফিরে আসুক। সব অন্ধকার কেটে যাক।’
সেশনজট শঙ্কার সমাধান কবে হবে— তা নিয়ে অনিশ্চিত শিক্ষার্থীরা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান নিশু বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ অচলাবস্থার কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা, ক্লাস, পরীক্ষা সবই স্থগিত রয়েছে। কবে এর সমাধান হবে, তাও জানা? নেই কারো। আমাদের সবচেয়ে নিরাপদ স্থানটা যে এভাবে অনিরাপদ হয়ে উঠবে, তা হয়তো কোনো শিক্ষার্থী কখনো ভাবেনি। জুনে শুরু হওয়া কোটা বৈষম্য নিয়ে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জীবন দিতে হয়েছে অনেক শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে। আমাদের সহপাঠী, ভাই-বোনের এই মৃত্যুর বিচার আমরা চাই, আটক নিরপরাধ ভাইদের মুক্তি চাই। আর কোনো তাজা প্রাণ বিলীন না হোক। এমন ভয়াবহতা বাংলাদেশ দ্রুত কাটিয়ে উঠুক, আমার বাংলাদেশ সুস্থ হোক, একটি নতুন ভোর হোক। আমরা ক্লাসে ফিরতে চাই।’
সেশনজটের বিষয়টিকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না শিক্ষকরাও। এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক সরকার আমার সংবাদকে বলেন, ‘আমার ২৯ মাস লেগেছে এক বছরে। এতটা সেশনজট ছিল। এখন ছাত্ররা এটি কল্পনাও করতে পারে না। আমরা এ অবস্থা থেকে উঠে এসেছি। এখন আবার সে জায়গায় যাওয়াটা কষ্টের। দ্রুতই ক্যাম্পাস খুলে দিলে ভালো হয়। এখন সেমিস্টার পদ্ধতি চলে, প্রতিটি দিনই এখন মূল্যবান। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরিবেশ এ মুহূর্তে আসেনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যেভাবে রুম পোড়ানো হয়েছে, সেখানে কীভাবে ছাত্রদের তোলা হবে? সেখানে কী ছাত্ররা থাকতে পারবে? এগুলো সংস্কার করতে সময় লাগবে। তদন্ত কমিটিকে সময় দেয়া হয়েছে আট সপ্তাহ। মানে দুই মাস। আমি ভিসি স্যারকে বলেছি একটু দ্রুত খোলার জন্য ব্যবস্থা নেয়া যায় কি না, সে অনুযায়ী কিছু করা যায় কি না।’
তবে বর্তমান ছাত্রআন্দোলন রাজনীতিকরণ হয়েছে বলে মনে করেন এ শিক্ষক নেতা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষকরাও কোটা সংস্কারের পক্ষে ছিলাম। সরকারও পক্ষে ছিল। সরকার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে যদি দ্রুত আলোচনায় বসত, তাহলে এত সমস্যা হতো না। এ সমস্যাগুলো আলোচনা দেরিতে হওয়ার জন্য হয়েছে। সাংবাদিক মারা গেছেন, পুলিশ সদস্য মারা গেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্কুল-কলেজের স্টুডেন্ট অব্দি মারা গেছে। মূলত তৃতীয় পক্ষ এখানে সুযোগ নেয়ায় এই পরিবেশ এতটা খারাপ হয়েছে। যারা মারা গেছেন, তাদের জন্য এখন দোয়া আর বিচার চাওয়া ছাড়া কী করার আছে? সরকারপ্রধান তাদের সহযোগিতা করছে। এখন একটা বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। এতগুলো জীবন অকালে চলে গেলো। আবার রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করা হয়েছে। এটা কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরা করতে পারবে না। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ভেতরে ঢুকে প্রশিক্ষিত কোনো গোষ্ঠী দেশের ক্ষতি করেছে। তাদের চিহ্নিত করে, তাদের সম্পদ ক্রোক করে দেশের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ করা উচিত বলে মনে করি।’
তবে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের বাইরে থাকা বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরাও। মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মালায়ার পিএইডি ফেলো ফাতেমা রহমান আমার সংবাদকে বলেন, ‘সারা বিশ্বের শিক্ষার্থীরা যখন নতুন সেমিস্টারে ভর্তি, উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ আর সেমিনার-কনফারেন্স নিয়ে দম ফেলার সুযোগ পাচ্ছে না, তখন আমার বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা জীবনসংকটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর গণমাধ্যমে দেশের যে প্রতিচ্ছবি আজ ভেসে উঠেছে, তা একজন শিক্ষক হিসেবে আমার মনোবেদনার কারণ। আমি উদ্বিগ্ন। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাঙ্গন বন্ধ রয়েছে, যার ক্ষতির প্রভাব সুদূরপ্রসারী হবে। এই বন্ধ সেশনজট তৈরি করবে। এছাড়াও এই আন্দোলন ও সমসাময়িক ঘটনাপ্রবাহ শিক্ষাঙ্গনে স্থায়ী ক্ষত তৈরি করবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ের মানসিক স্বাস্থ্যের যে অবনতি ঘটবে, তা কাটিয়ে ওঠা অনেক ক্ষেত্রেই অসম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।’