Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫,

সেই আব্দুর রহিমের ঠাঁই হলো বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে

আনোয়ার হোসাইন সোহেল

আনোয়ার হোসাইন সোহেল

জানুয়ারি ১০, ২০২৫, ১২:২৫ এএম


সেই আব্দুর রহিমের ঠাঁই হলো বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে

অবশেষে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে ঢাকা আসছেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ডিএমডি মো. আব্দুর রহিম।

রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের এমডি পদে প্রজ্ঞাপন জারির প্রায় দুই মাসের বেশি সময় ঝুলে থাকার পর অবশেষে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. আব্দুর রহিমকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

এর আগে তার লেখা কবিতা ও প্রবন্ধের বইতে শেখ মুজিবুর রহমান ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি থাকার অভিযোগে রূপালী ব্যাংকে তার নিয়োগ আটকে যায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপসচিব আফরোজা আক্তার রিবা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানা গেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. আ. রহিমকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে এবং অগ্রণী ব্যাংকের ডিএমডি কাজী আবদুর রহমানকে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে বদলি করা হয়েছে।

এর আগে, গত ২১ অক্টোবর রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক পাঁচ ব্যাংক- সোনালী, জনতা, অগ্রণী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে (বিডিবিএল) এমডি ও সিইও নিয়োগ দিতে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানকে চিঠি পাঠায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। একই সঙ্গে রাকাবের ডিএমডি মো. আব্দুর রহিমকে রূপালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি প্রস্তুত করে। তবে শেষ মুহূর্তে উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর ওই চিঠি আর পাঠানো হয়নি।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে মো. আব্দুর রহিম অনেক কবিতা ও প্রবন্ধ লিখে প্রকাশ করার অভিযোগ উঠে। সে কারণেই শেষ মুহূর্তে তাকে রূপালী ব্যাংকের এমডি হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রস্তুত করা চিঠি পাঠানো হয়নি।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার দেড় মাসের মাথায় নজিরবিহীনভাবে পতিত শেখ হাসিনা সরকারের সময় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের এমডিদের চুক্তির বাকি মেয়াদ বাতিল করতে ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। তারপর ব্যাংকগুলোর এমডি ও সিইও পদ শূন্য হয়। এরপর রাষ্ট্র মালিকানাধীন ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও চারটি বিশেষায়িত ব্যাংক মিলিয়ে ১০টি ব্যাংকে নতুন এমডি ও সিইও নিয়োগের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে সুপারিশ পাঠায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

এই সুপারিশ গত ১৬ অক্টোবর অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং ২০ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অনুমোদন করেন। চূড়ান্ত তালিকায় মো. আব্দুর রহিমের নামও ছিল। তবে সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েন আলোচিত এই ব্যাংক কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে বদলি প্রসঙ্গে মো. আব্দুর রহিম আমার সংবাদকে বলেন, কৃষি ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে আসতে পারাটা আমার জন্য খুশির। আমি সব সময় চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে অভ্যস্ত। কৃষি ব্যাংককে লাভজনক করতে হলে তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে, যেমন- খেলাপি ঋণ আদায়, পুনঃতফসিলকৃত ঋণ আদায় অথবা নিয়মিত করা এবং লো-কস্ট প্রফিট বাড়াতে হবে। এটা করতে পারলেই প্রায় তিনগুণ আয় বাড়বে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের।    

শেখ মুজিব ও হাসিনার নামে কবিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি কবিতা লিখেছি, গাছ ও সময় নিয়ে, কোনো ব্যক্তিকে উদ্দেশ করে আমি কখনো কোনো কবিতা লিখিনি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছিল।

রাকাব বা কৃষি ব্যাংক কোনটায় কাজ করা সুবিধাজনক জানতে চাইলে ডিএমডি আব্দুর রহিম বলেন, রাকাবকে আমি একটি লাভজনক ব্যাংকের কাতারে নিয়ে গিয়েছি। ২০১৮ সালে যেখানে রংপুর ৩২ কোটি টাকা লাভ করেছে সেখানে আমি ১৫৩ কোটি টাকা লাভ করতে সক্ষম হয়েছি। আমার সময়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক প্রায় ৩০০ কোটি টাকা প্রফিট করেছে। তবে কৃষি ব্যাংকের শাখা সারা দেশে আছে। সে কারণে এতে কাজ করা আমার জন্য আরও সহজ হবে। আগামী দিনে কৃষি ব্যাংককে আপনারা একটি লাভজনক ব্যাংক হিসেবে দেখতে পাবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন ডিএমডি রহিম।

Link copied!