Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫,

নির্বাচনি রোডম্যাপেই হাঁটছে রাজনৈতিক দলগুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

জানুয়ারি ২৪, ২০২৫, ১২:০১ এএম


নির্বাচনি রোডম্যাপেই হাঁটছে রাজনৈতিক দলগুলো
  • সরকারকে নির্বাচনের পথে রাখতে কৌশল

জুলাই অভ্যুত্থানের পর অল্পসময়ের মধ্যে গঠিত হয় নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। নানা চ্যালেঞ্জ ও সংস্কার কাজে সরকারকে সহায়তা করেছে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তবে পাঁচ মাসের মাথায় সরকারকে সংস্কার কাজে আর সময় দিতে চায় না বড় রাজনৈতিক দলগুলো। তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের দাবিতে মাঠে নামছে। 

রাজনৈতিক দলগুলো দ্রুত নির্বাচনি রোডম্যাপ চায় অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে। এদিকে নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক দলগুলো। তাদের লক্ষ্য  গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে চাপ সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের পথে রাখা। সমমনা দল ও জোটের নেতারা মনে করেন, এই সরকার জনগণের আন্দোলনের ফসল। জনগণ চায় প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন ব্যবস্থা করবে। নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশের সংকট নির্বাচন করা সম্ভব নয়। তাই জনগণের নির্বাচিত সরকার এসে অন্যান্য সংস্কার প্রস্তাবগুলো ক্রমে ক্রমে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করবে।

সমপ্রতি সমমনা দল ও জোট নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছে বিএনপি। বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনই ছিল প্রধান ইস্যু। দ্রুততম সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। একই সঙ্গে ন্যূনতম সংস্কার শেষে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করারও দাবি নেতাদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে মানববন্ধন, সেমিনার, এমনকি পদযাত্রাও হতে পারে। এই কর্মসূচিগুলো বিভাগীয় পর্যায়ে পালন করার কথা ভাবছে সমমনারা। জনগণকে সম্পৃক্ত করার জন্যই এই কর্মসূচি দেয়া হবে। এই দাবিগুলো জনগণের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্যই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সম্প্রতি সমমনা দল ও জোট নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছে বিএনপি। বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনই ছিল প্রধান ইস্যু। দ্রুততম সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। একই সঙ্গে ন্যূনতম সংস্কার শেষে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করারও দাবি নেতাদের।

এদিকে সমমনা জোট এবং দলের অনেক নেতাদের আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে আসনভিত্তিক জোট নেতাদের সহযোগিতা করতে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীকে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে দলটি। সমমনা নেতাকে জনসংযোগ এবং তার দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে সহায়তা করতে নির্বাচনি আসনের থানা, উপজেলা, পৌরসভার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ওই চিঠির অনুলিপি জোটের সংশ্লিষ্ট শীর্ষ নেতাদেরও দিয়েছে দলটি।

গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বিএনপির সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিএনপির সঙ্গে আমাদের পূর্ব থেকেই ভালো বোঝাপড়া রয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন এবং দেশের সার্বিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।
বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমরা মনে করি প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন হওয়া উচিত। জনগণের নির্বাচিত সরকার ছাড়া সংকট সমাধানের কোনো বিকল্প নেই। একটি অনির্বাচিত সরকার বেশিদিন দেশ চালাতে পারবে না, এছাড়া চালানো উচিতও নয়। তাহলে নতুন নতুন সংকটের সৃষ্টি হবে। এসব নিয়ে বিএনপির সাথে আলোচনা হয়েছে। বিএনপিকে আহ্বান জানিয়েছি নির্বাচনকে দ্রুত করার জন্য যদি গণকর্মসূচি দেয়া হয়; সেই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক কর্মসূচি বলে আমরা কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করব। 

নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, সদিচ্ছা থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন দেয়া সম্ভব। অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে পারে না। সরকার ও দেশের জন্য এটা ঝুঁকিপূর্ণ। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। আগামী ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে কমিশন নির্বাচনের জন্য শতভাগ তৈরি হয়ে যেতে পারবে। তাহলে আগামী ৫-৬ মাসের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব। এখন বাকিটা নির্ভর করছে সরকারের ওপর। তারা চাইলে জুলাই-আগস্টে নির্বাচন করা অসম্ভব নয়।

১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমরা মনে করি প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন হওয়া উচিত। জনগণের নির্বাচিত সরকার ছাড়া সংকট সমাধানের কোনো বিকল্প নেই। একটি অনির্বাচিত সরকার বেশিদিন দেশ চালাতে পারবে না, এছাড়া চালানো উচিতও নয়। তাহলে নতুন নতুন সংকটের সৃষ্টি হবে। এসব নিয়ে বিএনপির সাথে আলোচনা হয়েছে। বিএনপিকে আহ্বান জানিয়েছি নির্বাচনকে দ্রুত করার জন্য যদি গণকর্মসূচি দেয়া হয়; সেই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক কর্মসূচি হলে আমরা কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করব।

দেশটা এখন খুব একটা ভালো চলছে না। এই সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল, আমরা খুব একটা সরকারের বিপক্ষে যেতেও পারব না। কিন্তু এদেরকে আমরা বুঝাতে চাই, বলতে চাই যে, তোমরা সঠিক পথে এসো। মানুষ যে দীর্ঘদিন ভোট দিতে পারেনি, ক্ষোভ রয়েছে। মানুষ চেয়েছে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে সরকার একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। রাজনৈতিক সরকার এসে অন্যান্য সংস্কার প্রস্তাবগুলো ক্রমে ক্রমে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করবে।

Link copied!