নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৫, ১২:০৫ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৫, ১২:০৫ এএম
টঙ্গীর তুরাগ তীরে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এর আগে বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলার আম বয়ানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার ৫৮তম জমায়েত শুরু হয়। বয়ানের অনুবাদ করেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের। এরপর গতকাল বৃহত্তম জুমার জামাত অনুষ্ঠিত হয় ইজতেমা ময়দানে। জুমার জামাতে ইমামতি করেন মাওলনা জুবায়ের। জুমার নামাজে অংশ নেন দেশ-বিদেশ থেকে আগত লাখ লাখ মুসল্লি।
তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নিজামের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলার আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এবারের বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা। শুক্রবার বাদ ফজর বয়ান করেছেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক। সকাল ১০টায় বিভিন্ন খিত্তায় খিত্তায় তালিমের আমল হয়। এরপর অনুষ্ঠিত হয় দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজ। এতে ইমামতি করেন মাওলানা জুবায়ের।
ইজতেমার আয়োজকরা জানান, এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হবে দুই ধাপে। এর মধ্যে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হবে প্রথম ধাপের ইজতেমা। এ ধাপে অংশগ্রহণ করবেন ৪১ জেলা ও ঢাকার একাংশের মুসল্লিরা। এরপর আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা। এ ধাপে অংশ নেবেন ২২ জেলা ও ঢাকার বাকি অংশের মুসল্লিরা। দুই ধাপের আখেরি মুনাজাত হবে যথাক্রমে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি ও ৫ ফেব্রুয়ারি।
এদিকে ইজতেমার বৃহত্তম জুমার জামাতে অংশ নিতে দলে দলে ময়দানে আসেন মুসল্লিরা। বাস, ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে করে ময়দানে আসতে দেখা যায় তাদের। ইজতেমা মাঠের প্রায় প্রতিটি প্রবেশপথেই গতকাল মুসল্লিদের জটলা দেখা গেছে। ঢল নামে মুসল্লিদের। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন সাংবাদিকদের জানান, ময়দানে আগত মুসল্লিদের আগমন ও স্থান সংকলন করতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এবারের বিশ্ব ইজতেমাকে সামনে রেখে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরবর্তী সুবিশাল এলাকায় প্রায় ১৬০ একর জমির ওপর তাবলিগ জামাতের সদস্যদের থাকার জন্য বিশাল চটের প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে টিনের চালা দিয়ে বিদেশি মেহমানদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক নিবাসে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও টেলিফোন সংযোগসহ আধুনিক বিভিন্ন সুবিধাগুলো সর্বাত্মক ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে ইজতেমা ময়দানে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে র্যাব-পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থা। দেশের বিভিন্ন ইউনিট থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্যরাও ইজতেমা ময়দানে বিশেষ ডিউটি পালন করছেন। ফায়ার সার্ভিস ময়দানে অসুস্থ হওয়া মুসল্লিদের উদ্ধার করে হাসপাতাল নেয়ার কাজ করছে। কাজ করছে অগ্নিনিরাপত্তা নিয়েও। প্রতিটি খিত্তায় দুইজন করে ফায়ার ফাইটার রেখে ইজতেমায় অগ্নিনিরাপত্তাসহ সার্বিক কার্যক্রমে অংশ নেয় ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গতকাল জুমার নামাজের আগে-পরে অন্তত ১৫ জন মুসল্লি অসুস্থ হয়েছেন। আমরা তাদের উদ্ধার করে আহসান উল্লাহ মাস্টার হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। আর বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছেন দুই মুসল্লি।
বৈশ্বিক এই সম্মেলনে দেশের সাধারণ মুসল্লিদের পাশাপাশি অংশ নিচ্ছেন বিদেশিরাও। এখন পর্যন্ত ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, ইংল্যান্ড ও আরব আমিরাতসহ ৭২টি দেশের দুই হাজারেরও বেশি বিদেশি মেহমান ইজতেমা ময়দানে এসেছেন বলে জানা গেছে। তারা নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান নিয়ে তালিম ও বয়ানে অংশ নিচ্ছেন। এবারের ইজতেমা শুরায়ে নেজামের (জুবায়ের অনুসারী) অধীনে দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যা শেষ হবে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি। মাঝে আট দিনের বিরতি দিয়ে আগামী ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভি অনুসারীদের ইজতেমা পর্ব।