নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ৫, ২০২৫, ১২:০৭ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ৫, ২০২৫, ১২:০৭ এএম
রাজধানীর রায়েরবাজারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের কবর জিয়ারত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতারা। জিয়ারত শেষে এনসিপির নেতারা ডান-বামের বিভাজনের মধ্যে না গিয়ে মধ্যপন্থি রাজনীতি সূচনার অঙ্গীকারের কথা জানান।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জিয়ারত শেষ সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ কথা জানানো হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমসহ অন্যান্য নেতারা।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে খুনি হাসিনার দৃশ্যমান বিচার দেখতে চাই। এতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের প্রতি কিছুটা সুবিচার সম্ভব হবে। বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে রাজনৈতিক ফায়সালা দরকার।
তিনি আরও বলেন, নতুন প্রজাতন্ত্র গড়তে একটি নতুন সংবিধান দরকার। এর মাধ্যমেই কেবল শাসন কাঠামো ও পুরনো সংবিধান পরিবর্তন করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারব।
এ সময় দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ডান-বামের বিভাজনের মধ্যে না গিয়ে মধ্যপন্থি রাজনীতির সূচনা করার অঙ্গীকারের কথা জানান। রাজনৈতিক দল গঠনের পর প্রথম দলীয় কর্মসূচিতে এর আগে সকাল ৭টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় এনসিপি। এতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আ. লীগের রাজনৈতিক ফয়সালা হবে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এখানে (বাংলাদেশে) সংগঠিত যে গণহত্যা সেই গণহত্যার বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর দেখতে চাই এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ফয়সালা এই বাংলার মাটিতে করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল, যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এবং গত ১৫ বছরে নানা জুলুম করেছে, তাদের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে দ্রুত সময়ের মধ্যে এই বিচার বাংলাদেশের মানুষ দেখতে চায়। বিচারের পরে যে সংস্কার কার্যক্রম জাতীয় ঐক্যমত যে কমিশন রয়েছে দ্রুত জাতীয় সংলাপে গিয়ে আমাদের যে জুলাই সনদ এবং যে জুলাই ঘোষণাপত্র তা দ্রুত বাস্তবায়ন আমরা দেখতে চাই।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র পেলেও আমাদের সার্বভৌমত্ব বারবার হুমকির মধ্যে পড়েছে। আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ বারবার ভেঙে পড়েছে। আমরা একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান গড়ে তুলতে পারিনি। একটি একদলীয় সংবিধানের মাধ্যমে ফ্যাসিজম, একদলীয় স্বৈরতন্ত্রের বীজ রোপণ করা হয়েছিল।
জাতীয় নাগরিক পার্টির এই শীর্ষনেতা বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বারবার দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। এবার যাতে আর দীর্ঘায়িত না হয়, ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান যাতে ব্যর্থ না হয়, পুরনো সংবিধান ও শাসনকাঠামো রেখে একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। কেবল সরকার পরিবর্তন করেই আমাদের জনগণের যে কল্যাণ সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। সেজন্য আমরা বলছি, এই ২৪ সালে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়েছে, কেবল সরকার পরিবর্তন নয়, শাসনকাঠামোসহ পুরো সাংবিধানিক পরিবর্তন করে নতুন একটি বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে চাই। যেখানে প্রকৃত গণতন্ত্র, ইনসাফ এবং সাম্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির এই মুহূর্তের প্রধান কাজ হলো তার সাংগঠনিকভাবে কার্যক্রম বিস্তৃতি করা। তৃণমূলে সাংগঠনিক কার্যক্রম বিস্তৃত করা। তিনি বলেন, নিবন্ধন নিতে যে ধরনের শর্ত পূরণ করতে হয়, সেই শর্তগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণ করে আমরা নিবন্ধন কার্যক্রমের দিকে এগোবো। এই মাসের মধ্যে আমাদের গঠনতন্ত্র প্রণয়নের কাজ শুরু করব।
এর আগে, সাভারের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা। সকাল ৭টার দিকে তারা স্মৃতিসৌধে প্রবেশ করে শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।