Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫,

চীনা-মার্কিন শুল্ক যুদ্ধ

যুক্তরাষ্ট্রের ১৪৫-এর জবাবে চীনের ১২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

এপ্রিল ১২, ২০২৫, ১২:১৬ এএম


যুক্তরাষ্ট্রের ১৪৫-এর জবাবে চীনের ১২৫
  • বিশ্বঅর্থনীতি বাজার ও বহুপক্ষীয় বাণিজ্যে বড় ধাক্কা

হোয়াইট হাউসের ১৪৫ শতাংশ শুল্কের জবাবে মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা ১২৫ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা দিলো বেইজিং। দুই দেশের শুল্ক-পাল্টা শুল্কের প্রভাবে শেয়ার বাজারে আবারো শুরু হয়েছে দরপতন। মার্কিন পণ্যের উপরে আরোপিত শুল্ক ৮৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দিলো বেইজিং।

এর আগে গত বুধবার হোয়াইট হাউস চীনের উপর আরোপিত শুল্কের হার বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দেয়। বৃহস্পতিবার ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়, চীনের অধিকাংশ পণ্যের ওপর আগে থেকেই ২০ শতাংশ হারে শুল্ক চালু করা হয়েছিল। তার ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। অর্থাৎ, চীনা পণ্যের ওপর মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪৫ শতাংশে। অন্য সব দেশের ওপর বর্ধিত শুল্ক স্থগিত রাখলেও চীনের ওপর তা বহাল রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

ইইউর সিদ্ধান্ত নিয়ে ট্রাম্প : গত বৃহস্পতিবার ইইউ জানিয়েছে, মার্কিন শুল্কের পাল্টা হিসেবে তারা যে শুল্ক চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা স্থগিত থাকছে। ট্রাম্পের শুল্ক স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারাও আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের পথ খোলা রাখছে।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেছেন, ‘আমরা আলোচনার সুযোগ দিতে চাই। যদি আলোচনায় ফল না হয়, তা হলে আমাদের পাল্টা ব্যবস্থার সিদ্ধান্তও নেয়া আছে।’ এরপর ট্রাম্প বলেছেন, ‘ইইউ খুব স্মার্ট। ওরা প্রত্যাঘাত করতে তৈরি ছিল। কিন্তু আমরা চীনের প্রতি কী ব্যবস্থা নিয়েছি তা শোনার পর ওরা বলছে, ওরা একটু পিছিয়ে যাচ্ছে।’

মার্কিন শেয়ার বাজারে প্রভাব : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প চীন ছাড়া বাকি দেশগুলোর ওপরে বাড়তি শুল্ক চালুর সিদ্ধান্ত ৯০ দিন স্থগিত রাখার পর শেয়ার বাজার চাঙ্গা হয়েছিল। কিন্তু দিনের শেষে মার্কিন শেয়ার বাজার পড়েছে। বিশ্বজুড়ে মন্দা ও বাণিজ্য যুদ্ধের সম্ভাবনায় এটা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ প্রথমে সাড়ে ৯০ শতাংশ উঠলেও বাজার বন্ধ হওয়ার সময় সাড়ে তিন শতাংশ পড়ে যায়। অশোধিত তেলের দামও কমেছে। ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারের দাম দুই শতাংশ কমেছে।

প্রসঙ্গত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্কহার ৮৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশে উন্নীত করছে। এই নতুন শুল্ক আজ শনিবার থেকে কার্যকর হবে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বেইজিংয়ের সঙ্গে একত্র হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘একতরফা নিপীড়নের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো আহ্বান জানানোর কয়েক ঘণ্টা পরেই এই ঘোষণা এলো।

এর আগে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন। এর আগে ৯ এপ্রিল চীনা পণ্যে ১০৪ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করে ট্রাম্প প্রশাসন। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বৃহস্পতিবার চীনও মার্কিন পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ৩৪ থেকে ৮৪ শতাংশ করে। আর একদিন পরেই মার্কিন পণ্যে নতুন করে শুল্ক আরোপ করলো বেইজিং।

চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বর্তমান শুল্কহারের প্রেক্ষাপটে মার্কিন পণ্যের জন্য চীনা বাজারে গ্রহণযোগ্যতার কোনো সম্ভাবনা নেই। যুক্তরাষ্ট্র বারবার অস্বাভাবিকভাবে উচ্চহারে যে শুল্ক আরোপ করছে, তা এখন শুধুই একটি সংখ্যার খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এটির কোনো বাস্তব অর্থনৈতিক বাস্তব ভিত্তি নেই।

বেইজিংয়ের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির কারণেই বিশ্ব অর্থনীতি, বাজার ও বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থাগুলো বড় ধাক্কা খেয়েছে। এই বৈশ্বিক অস্থিরতার সম্পূর্ণ দায় যুক্তরাষ্ট্রকেই নিতে হবে। জিনপিং প্রশাসন আরও দাবি করেছে, ট্রাম্প অন্যান্য দেশের ওপর শুল্ক স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চীনের চাপের ফলেই।

Link copied!